রেমিট্যান্স পাঠানোর নিয়ম - বিদেশ থেকে ইসলামী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম
বাংলাদেশের অর্থনীতির মেরুদন্ড হলো প্রবাসীরা বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশিরা
নিয়মিতভাবে দেশে টাকা পাঠিয়ে তাদের পরিবার পরিজনদেরকে তো সাহায্য করছে সেই সাথে
আমাদের দেশ কেউ উন্নতির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তবে অনেক বিদেশী বিদেশে যাওয়ার
রোগে কিভাবে রেমিটেন্স পাঠাবেন। আপনি যদি তাদের মধ্যে একজন হোন তাহলে এই
আর্টিকেলটিতে আপনি জানতে পারবেন রেমিট্যান্স পাঠানোর নিয়ম ।
এছাড়াও আরও জানতে পারবেন বিদেশ থেকে ইসলামী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম ,
রেমিট্যান্স পাঠানোর নিয়ম ও বিদেশ থেকে টাকা আসতে কতদিন সময় লাগে ।
ভুমিকা
বাংলাদেশ একটি অন্যতম প্রবাসী শ্রম নির্ভর দেশ। বাংলাদেশের প্রায় এক কোটি
প্রবাসী এখনো বাইরের দেশে অর্থাৎ বিদেশে কর্মরত রয়েছেন। তারা প্রতিনিয়ত আমাদের
দেশকে এবং আমাদের দেশে অর্থনৈতিক দিক থেকে অনেক উন্নিত করছে। তবে অনেক প্রবাসী
সঠিকভাবে টাকা পাঠানোর নিয়মটি এখন অব্দি জানেন না। আপনি যদি তাদের মধ্যে হয়ে
থাকেন তাহলে এই আর্টিকেল শুধুমাত্র আপনার জন্য। চলুন আর্টিকেলের প্রথম অংশ আমি
আপনাকে জানাই বিদেশ থেকে ইসলামী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম ।
বিদেশ থেকে ইসলামী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম
বাংলাদেশের প্রায় অনেকগুলো ব্যাংক রয়েছে তবে সব ব্যাংক গুলোতে বিদেশ থেকে টাকা
পাঠানো যায় না যে ব্যাংক গুলোতে বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো যায় তাদের মধ্যে
উল্লেখযোগ্য একটি ব্যাংক হল ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড।
বিশেষ করে অনেক বাঙালি প্রবাসী এই মাধ্যমটি ব্যবহার করে থাকেন এবং এই মাধ্যম সব
থেকে সেইফ মনে করেন। যে সকল বাঙালিরা নতুন প্রবাসী হয়েছেন তাদের জন্য এই
আর্টিকেলটি। চলুন এখন আমি আপনাকে জানাই বিদেশ থেকে ইসলামী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর
নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
বিদেশ থেকে ইসলামী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম ও ধাপ রয়েছে। চলুন
তো এখন সে হাত গুলো সম্পর্কে আপনাকে জানাই-
প্রথমত অবশ্যই সেই ব্যাংকটি অনুমোদিত হতে হবে অর্থাৎ সেই ব্যাংকটির মানি
এক্সচেঞ্জ হাউস থাকতে হবে যদি সেই ব্যাংকের মানি এক্সচেঞ্জ হাউজ না থাকে তাহলে
আপনি সেই ব্যাংকে টাকা পাঠাতে পারবেন না।
এরপরে আপনি যেই ব্যক্তিকে বা যাকে আপনি টাকা পাঠাবেন তার অবশ্যই বাংলাদেশ ইসলামী
ব্যাংক লিমিটেড এ একটি সক্রিয় একাউন্ট থাকতে হবে তাহলে ব্যাপারটা অনেক সহজে হয়ে
যাবে। তবে যদি আপনার প্রাপকের বা যে ব্যক্তির কাছে টাকা পাঠাচ্ছেন সেই ব্যক্তি
যদি একাউন্ট না থাকে তাহলে ক্যাশ রেমিটেন্সের মাধ্যমে প্রাপকের জাতীয় পরিচয়
পত্রের কপি দেখিয়ে সে টাকা সংগ্রহ করতে হবে।
এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে প্রত্যেকটি ব্যাংকের একটি নির্দিষ্ট সুইফট
কোড রয়েছে সেই সুইফট কোড যদি আপনি ব্যবহার না করেন তাহলে সেই করে টাকা প্রবেশ
করবে না। এর জন্য অবশ্যই আপনাকে ইসলামী ব্যাংকের সুইফট কোডটা সংগ্রহ করতে হবে এবং
ইসলামী ব্যাংকের সুইফট কোড অনুযায়ী আপনাকে টাকা পাঠাতে হবে।
তবে এর ক্ষেত্রে কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে হবে যেগুলো অবশ্যই যে ব্যক্তিকে টাকা
পাঠাবেন বাজার যে প্রাপক তার কাছে পাঠাতে হবে।
সে তথ্যগুলো হল সেই শাখার নাম যে শাখাই সে ব্যাংকে থাকবে সেই শাখার নাম এবং
মোবাইল নাম্বার এবং তার স্থায়ী ঠিকানা দিতে হবে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে
বিষয়টি সেটি হল অ্যাকাউন্ট নাম্বার এবং একাউন্ট হোল্ডার এর নাম অবশ্যই দিতে হবে
এবং সেটি যেন অবশ্যই জাতীয় পরিচয়পত্রের সাথে মিলে না মিললে প্রব্লেম হতে পারে ।
আমি আপনাকে জানাচ্ছি বিদেশ থেকে ইসলামী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম , রেমিট্যান্স
পাঠানোর নিয়ম ও বিদেশ থেকে টাকা আসতে কতদিন সময় লাগে ।
অবশ্যই যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে টাকা পাঠানোর
সময় যে আপনি যে ট্র্যাকিং নাম্বার বাজে রশিদ পেয়েছেন সেটি আপনার কাছে সংগ্রহ
করে রাখতে হবে। এবং আপনাকে বারবার খেয়াল করতে হবে যে আপনি সঠিক অ্যাকাউন্ট
নাম্বার এবং সঠিক নাম লিখছেন কিনা অথবা আপনার ঠিকানাও যদি ভুল হয় সে ক্ষেত্রেও
কিন্তু টাকা আসতে বিলম্ব হয়
এবং কোন কোন ক্ষেত্রে টাকা আসেও না। আপনি অবশ্যই এই ধরনের বিশ্বস্ত কোন ব্যাংক
ছাড়া অন্য ধরনের কোন থার্ড পার্টি অ্যাপস এর মাধ্যমে টাকা পাঠানোর চেষ্টা করবেন
তাহলে আপনার সময় ও টাকা দুইটাই নষ্ট হবে।
এতক্ষন আমি আপনাকে বিদেশ থেকে ইসলামী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম সম্পর্কে
বিস্তারিত জানিয়েছি আর্টিকেলের পরের অংশ আমি আপনাকে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা
করব রেমিট্যান্স পাঠানোর নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত।
রেমিট্যান্স পাঠানোর নিয়ম
বাংলাদেশ একটি অন্যতম রেমিটেন্স নির্ভর দেশ বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি বড় অংশ
গড়ে ওঠে বিদেশি কর্মরত প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের মাধ্যমে।
তবে অনেক প্রবাসী সঠিক নিয়মে টাকা পাঠাতে পারেন না যার ফলে অনেকেই অনেক ধরনের
সমস্যার সম্মুখীন হয় এই আর্টিকেলটি তে আমরা সেভাবে সাজিয়েছি যাতে করে আপনার
রেমিটেন্স পাঠানোতে কোন ধরনের সমস্যা না হয় তাহলে চলুন আমি আপনাকে জানাই এখন
রেমিট্যান্স পাঠানোর নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
রেমিটেন্স পাঠানোর নিয়ম জানানোর আগে আপনাকে আমি জানাই যে কিভাবে আপনি অবৈধ পথে
টাকা পাঠানোর হাত থেকে রক্ষা পাবেন।
অনেক প্রবাসী হুন্ডির মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠানোর চেষ্টা করেন যা ঝুঁকিপূর্ণ এবং
অবৈধ এর ফলে অনেকে টাকা পায় না অনেকে প্রতারণা শিকার হয় এবং সবচেয়ে
গুরুত্বপূর্ণ যে জিনিসটা সেটা হচ্ছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং এটি কিন্তু আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য একটি অপরাধ।
এর আগে আমি আপনাকে জানিয়েছি বিদেশ থেকে ইসলামী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম এর পরে
আমি আপনাকে জানাবও বিদেশ থেকে টাকা আসতে কতদিন সময় লাগে?
আরো পড়ুনঃ
মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে করবেন?
রেমিটেন্স পাঠানোর সময় যে সর্তকতা গুলো অবলম্বন করতে হবে তাদের মধ্যে
উল্লেখযোগ্য হলো প্রাপকের নাম ও অ্যাকাউন্ট নাম্বার সঠিকভাবে লিখতে হবে এবং যে
ব্যাংকে টাকা পাঠাতে চান সেই ব্যাংকের সুইফট কোড নির্দিষ্ট ভাবে প্রদান করতে হবে।
রেমিট্যান্স পাঠানোর নিয়ম গুলো হলোঃ
অবশ্যই আপনাকে নির্দিষ্ট ব্যাংক এ সিলেট করতে হবে যে ব্যাংকটি সবচেয়ে নিরাপদ এবং
নির্ভরযোগ্য আপনি মনে করেন। তারপর অবশ্যই সেই ব্যাংকের বিদেশে বাংলাদেশের ব্যাংক
অনুযায়ী অনুমতি এক্সচেঞ্জ হাউস থাকতে হবে। এছাড়াও বর্তমানে অনলাইনের মাধ্যমে
খুব সহজে টাকা পাঠানো যাচ্ছে যেমন ট্রান্সফাস্ট, ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন, মানিগ্রাম
ইত্যাদিতে।
বর্তমানে অনেক ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস বিকাশ নগদ রকেট এজেন্টের মাধ্যমে
বাংলাদেশের রেমিটেন্স গ্রহণ করছে।
রেমিটেন্স পাঠানোর নিয়ম গুলো যদি এক নজরে আপনাকে বলি তাহলে সেগুলো হল
- ১. আপনাকে অবশ্যই বিশ্বস্ত এবং অনুমোদিত এক্সচেঞ্জ হাউ সিলেক্ট করতে হবে
- ২. যে ব্যক্তিকে টাকা পাঠাবেন বা প্রাপক কে টাকা পাঠাবেন তার অ্যাকাউন্ট নাম্বার শাখার নাম ঠিকানা মোবাইল নাম্বার ইত্যাদি একেবারে নিশ্চিত করতে হবে
- ৩. ইসলামী ব্যাংকের সুইফট কোড ব্যবহার করতে হবে । ইসলামী ব্যাংকের সুইফট কোড কি? {IBBLBDDH } ব্র্যাকেটে দেওয়া এই সংখ্যাগুলোই হচ্ছে ইসলামী ব্যাংকের সুইফট কোড।
- ৪. তারপর অবশ্যই আপনাকে একটি ফরম পূরণ করে সেই টাকা জমা দিতে হবে যত টাকা আপনি পাঠাতে চান।
- ৫. ট্রেকিং নাম্বার সংগ্রহ করতে হবে এবং অবশ্যই সেটি আপনাকে নিজের কাছে রাখতে হবে।
- ৬. আপনি যদি একাউন্টে টাকা পাঠান তাহলে অবশ্যই সরাসরি টাকা তুলতে পারবে এবং আপনার যদি একাউন্ট না থাকে তাহলে প্রাপক জাতীয় পরিচয় পত্র সেই শাখা কে বা নির্দিষ্ট এজেন্টকে দেখে নগদে টাকা নিতে পারবে।
আর্টিকেলের এই অংশ আমি আপনাকে জানালাম রেমিট্যান্স পাঠানোর নিয়ম আর্টিকেলের পরের
অংশ আমি আপনাকে জানাবো বিদেশ থেকে টাকা আসতে কতদিন সময় লাগে
বিদেশ থেকে টাকা আসতে কতদিন সময় লাগে
অনেকে জানতে চেয়ে থাকেন যে বিদেশ থেকে টাকা আসতে কতদিন সময় লাগে। তাহলে চলুন
এখন আমি আপনাকে জানাই বিদেশ থেকে টাকা আসতে কতদিন সময় লাগে সে সম্পর্কে
বিস্তারিত তথ্য।
আপনি যদি ব্যাংক ট্রান্সফার করেন তাহলে সাধারণত বাংলাদেশে টাকা আসতে সময় লাগে
দুই থেকে পাঁচ কার্যদিবস অর্থাৎ শুক্র ও শনিবার ব্যতীত কার্য দিবসের মধ্যে আপনি
আপনার টাকা পেয়ে যাবেন।
আমি আপনাকে জানাচ্ছি বিদেশ থেকে ইসলামী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম , রেমিট্যান্স
পাঠানোর নিয়ম ও বিদেশ থেকে টাকা আসতে কতদিন সময় লাগে ।
এছাড়া আপনি যদি মানি এক্সচেঞ্জ অথবা অনলাইন ট্রান্সফার করেন তাহলে আপনার ২৪
ঘন্টা থেকে এই দুই দিনের মধ্যে আপনি টাকা পেয়ে যাবেন তবে এই দুই দিন অবশ্যই
কার্য দিবস হতে হবে না। আর্য দিবস না হলে আপনি সে টাকা হাতে পেয়ে যাবেন।
এছাড়া আপনি যদি ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন অথবা মানি গ্রামের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে চান
তাহলে আপনি ১০ মিনিট থেকে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আপনি টাকা হাতে পেয়ে যাবেন।
তবে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন আপনি যেন কোন প্রতারক চক্রের মাধ্যমে টাকা না পাঠান এটি
একটি জঘন্য অপরাধ এবং দেশের জন্য ক্ষতি। এতক্ষণ আমি আপনাকে জানালাম বিদেশ থেকে
টাকা আসতে কতদিন সময় লাগে
শেষ কথা
বিদেশ থেকে ইসলামী ব্যাংকে টাকা পাঠানো একটি নিরাপদ প্রক্রিয়া। এর জন্য এই
আর্টিকেলটি আমি আপনাকে জানালাম বিদেশ থেকে ইসলামী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম ,
রেমিট্যান্স পাঠানোর নিয়ম ও বিদেশ থেকে টাকা আসতে কতদিন সময় লাগে।
আশা করি এ আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন এবং এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি
আপনার মনের ভেতরে থাকা সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে থাকেন তাহলে আপনি আপনার বন্ধুদের
সাথে শেয়ার করুন এবং এইরকম তথ্যসম্বলিত ও গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পেতে আমাদের
ওয়েবসাইটটি প্রতিদিন ভিজিট করুন। ধন্যবাদ
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url