রূপচর্চায় কলার খোসার অপ্রতিরোধ্য ক্ষমতা ও পাকা কলার ফেস প্যাকের জাদু
আমরা কলা খাওয়ার পরে সাধারণত কলার খোসা ফেলে দিয়ে থাকি কিন্তু কলার খোসার অনেক উপকারিতা
রয়েছে । এই আর্টিকেল টি মনোযোগ পড়লে আপনি কলার খোসা নিয়ে সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন
।
এছাড়াও কলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা,পাকা
কলার ফেসপ্যাক,চুলের যত্নে কলার খোসা,কলা মুখে দিলে কি হয় ও কাঁচা কলার খোসার
উপকারিতা
ভূমিকা
আপনি হয়তো কলা খেয়ে কলার খোসা ফেলে দেন কিন্তু এই কলার খোসা আপনার চেহারায়
ব্যবহার করে আপনিও পেতে পারেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ছোয়া। এই আর্টিকেল টি তে আমি
আপনাকে কলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা ,পাকা কলার ফেসপ্যাক, চুলের যত্নে কলার খোসা,
কলা মুখে দিলে কি হয়, কাঁচা কলার খোসার উপকারিতা এগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত
জানাবো।
কলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা
আপনি যদি এখানে কলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা
সম্পর্কে
জানার জন্য এসে থাকেন তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় ক্লিক করেছেন।
১। চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে সাহায্য করেঃ আপনি কলার খোসা কলা থেকে ছাড়িয়ে
৫ থেকে ১০ মিনিটের জন্য চোখের নিচে রেখে দিলে কলার খোসা আপনার চোখের কালো দাগ দূর
করতে সাহায্য করবে।
আরো পড়ুনঃ
খালি পেটে কলা খেলে কি হয়?
২। ব্রণের দাগ ও ফুসকুড়ি দূর করতে সাহায্য করেঃ আপনি কলার খোসার ভেতরের সাদা অংশ
দিয়ে ব্রণের উপর হালকা স্ক্রাব করুন এবং ৫ থেকে ১০ মিনিট রেখে দিন এরপর আপনি
আপনার ফেস পানি দিয়ে ধুয়ে ফেললে কলার খোসা আপনার
মুখের ব্রণের দাগ দূর করতে সাহায্য করবে।
৩। ত্বকে চুলকানি ও পোকামাকড় কামড়ালেঃ আপনার শরীরের কোন অঙ্গে যদি পোকামাকড়ের
কামড় দেয় এবং জ্বালাপোড়া করে তাহলে কলার খোসা দিয়ে হালকা স্ক্র্যাব করে নিলে
আপনার শরীরে চুলকানি আর জ্বালা পোড়া কম করতে সাহায্য করবে।
৪। চুলের যত্নেঃ আপনার মাথায় যদি খুশকি হয়ে থাকে এবং চুল উসকো খুসকো হয় তাহলে
কলার খোসা আপনার চুলের জন্য উপকারী । আপনি কলার খোসার সাথে নারকেল তেল ও টক দই
মিশিয়ে পেস্ট করে চুলের গোড়ায় লাগাতে পারেন। এটি আপনার মাথা থেকে খুশকি দূর
করতে সাহায্য করবে এবং চুল মসৃণ করতেও সাহায্য করবে।
এতক্ষণ আমি আপনাকে কলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা সম্পর্কে জানালাম এর পরের অংশে আমি
আপনাকে পাকা কলার ফেসপ্যাক সম্পর্কে জানাবো।
পাকা কলার ফেসপ্যাক
আপনি যদি আর্টিকেল টিতে পাকা কলার ফেসপ্যাক সম্পর্কে জানার জন্য এসে থাকেন তাহলে
আপনি সঠিক জায়গায় ক্লিক করেছেন।
১। পাকা কলা + দই
আপনার ত্বক যদি শুষ্ক হয়ে থাকে তাহলে এই ব্যক্তি আপনার ত্বকের জন্য উপকারী হতে
পারে। আপনি একটি পাকা কলার সাথে এক চামচ দই ভালোভাবে মিক্স করে নিয়ে আপনার মুখে
10 থেকে 15 মিনিটের জন্য রেখে দিন এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি আপনার
ত্বককে ড্রাই হওয়া থেকে রক্ষা করতে পারে।
২। পাকা কলা + মধু
আপনি যদি উজ্জ্বল তক চান তাহলে এই প্যাকটি হয়তো আপনার জন্য উপকারী হতে পারে।
আপনি একটি পাকা কলার সাথে এক চামচ মধু মিশিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিটের জন্য মুখে
লাগিয়ে রাখুন এরপর নরমাল টেম্পারেচার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এটি আপনার ত্বককে
মসৃণ এবং উজ্জ্বল করতে সাহায্য করতে পারে।
৩। পাকা কলা+লেবু+বেসন
আপনার মুখে যদি দাগ থাকে তাহলে এই প্যাকটি আপনাকে সাহায্য করতে পারে। এই প্যাকটি
আপনার মুখের ট্যান রিমুভ করতে সাহায্য করবে। আপনি যদি পাকা কলার সাথে এক চিমটি
লেবু এক চামচ বেসন ভালোভাবে মিশিয়ে মুখে লাগান এবং ১০ বা ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে
ফেলেন। তাহলে এটি আপনার মুখের দাগ দূর করতে সাহায্য করবে মুখে ট্যান রিমুভ করতেও
আপনাকে সহায়তা করবে।
এতক্ষন আমি আপনাকে পাকা কলার ফেসপ্যাাক সম্পর্কে বিস্তারিত জানালাম এর পরবর্তী
অংশে আমি আপনাকে চুলের যত্নে কলার খোসা সম্পর্কে জানাবো।
চুলের যত্নে কলার খোসা
যদি এখানে চুলের যত্নে গলার খোসা সম্পর্কে
জানার জন্য এসে থাকেন তাহলে আপনি একদম সঠিক জায়গায় ক্লিক করেছেন ।
১। ডিপ কন্ডিশনার হিসেবেঃ আপনার চুল যদি উসকো খুসকো হয়ে থাকে তাহলে কলার খোসার
হেয়ার প্যাক আপনার চুলের জন্য গেম চেঞ্জার হতে পারে। আপনি কলার খোসা ব্লেন্ড করে
সরাসরি চুলে লাগাতে পারেন এটি আপনার চুলে কন্ডিশনার এর মত কাজ করতে পারে। এই
প্যাকটি আপনার চুলকে সিল্কি করতে সাহায্য করতে পারে।
২। কলার খোসার হেয়ার মাস্কঃ আপনার চুল যদি প্রাণবন্ত না হয় তাহলে এই কলার খোসার
হেয়ার মাস্ট টি আপনার চুলের জন্য উপকারী হতে পারে। আপনি একটি কলার খোসা সাথে এক
চামচ মধু এবং এক চেয়ে টেবিল চামচ নারিকেল তেল এবং একটি পাকা কলা মিকচারে মিক্স
করে আধা ঘন্টার জন্য চুলে রেখে দিলে এটি আপনার চুলের প্রাণ ফিরিয়ে আনতে সহায়তা
করবে।
৩। এলোভেরা জেল ও কলার খোসাঃ আপনার চুল যদি অকালে ঝরে পড়ে তাহলে এই প্যাকটি
আপনার চুল পড়া কমানোর জন্য গেম চেঞ্জার হতে পারে। আপনি দুই চা চামচ এলোভেরা জেল
প্লাস কলার খোসা ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে আধা ঘন্টার জন্য চুলে রেখে দিন এবং ৩০
মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।এটি আপনার চুল পড়া কমাতে সাহায্য করতে পারে।
এতক্ষণ আমি আপনাকে চুলের যত্নে কলার খোসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানালাম এর পরের
অংশে আমি আপনাকে কলা মুখে দিলে কি হয় এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো।
কলা মুখে দিলে কি হয়
আপনি যদি এখানে কলা মুখে দিলে কি হয় সম্পর্কে জানার জন্য এসে থাকেন তাহলে আপনি
একদম সঠিক জায়গায় ক্লিক করেছেন।
১। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াইঃ আপনার যদি ত্বকের উজ্জ্বলতা কমে যায় এবং আপনার ত্বক
তার প্রাণবন্ততা হারিয়ে ফেলে কলা আপনার ত্বকের জন্য উপকারী হতে পারে। কলায় থাকা
ভিটামিন এ এবং সি আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরে আনতে সহায়তা করবে এবং আপনার ত্বকে
প্রাণবন্ত করতে সাহায্য করবে।
২। ত্বকের জ্বালা ভাব ও লালচে ভাব কমায়ঃ আপনার ত্বক যদি খুবই সেনসিটিভ এবং
জ্বালাপোড়া করে তাহলে কলা আপনার ত্বকের জন্য উপকারী হতে পারি। কলা ত্বকের
জ্বালাপোড়া কমাতে সহায়তা করে।
৩। ব্রনের দাগ ও কালচেভাব কমায়ঃ আপনার ত্বকে যদি ব্রণের দাগ থাকে এবং কাল যে ভাব
থাকে তাহলে কলা আপনার ত্বকের জন্য উপকারী হতে পারে। আপনি যদি কলা নিয়মিত ব্যবহার
করেন তাহলে আপনার মুখের ব্রণের দাগ এবং কালচে ভাব দূর করতে সাহায্য করবে।
৪। ত্বক কোমল ও মসৃণ করেঃ আপনার ত্বক যদি খুবই শুষ্ক হয় তাহলে কলা আপনার ত্বককে
মসৃণ কোমল এবং নরম করতে সহায়তা করতে পারে। কলা আপনার ত্বকে মশ্চারাইজার হিসেবে
কাজ করতে পারে।
৫। বয়সের ছাপ কমায়ঃ আপনার বয়সের ছাপ কমানোর জন্য কলা উপকারী হতে পারে। কলার
মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আপনার বয়সের ছাপ কমাতে সহায়তা করতে পারে।
এতক্ষণ আমি আপনাকে কলা মুখে দিলে কি হয় এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানালাম এর পরের
অংশে আমি আপনাকে কাঁচা কলার খোসার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো।
কাঁচা কলার খোসার উপকারিতা
আপনি যদি এখানে কাঁচা কলার খোসার উপকারিতা সম্পর্কে জানার জন্য এসে থাকেন তাহলে
আপনি একদম সঠিক জায়গায় ক্লিক করেছেন।
১। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়কঃ আপনি যদি ডায়াবেটিসের রোগী হয়ে থাকেন তাহলে
কাঁচা কলার খোসা আপনার জন্য বেশ উপকারী হতে পারে। কাঁচা কলার খোসায় লো গ্লাইসে
মিস ইনডেক্স থাকায় এটি আপনার শরীরের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা
করবে
২। চুলের যত্নে সহায়কঃ আপনার চুলের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করবে যেমন চুল পড়া
কমাতে সাহায্য করতে পারে আপনার চুলের গোড়া শক্ত করতে সাহায্য করতে পারে আপনার
মাথার খুশকি ও দূর করতে সাহায্য করে কাঁচা খোসা।
৩। হজমে সহায়কঃ আপনার যদি হজমের সমস্যা হয়ে থাকে বা আপনি কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন
তাহলে আপনি কাঁচা কলার খোসা রান্না করে খেতে পারেন। কাঁচা কলার খোসায় আইরন
ভিটামিন বি৬ থাকায় একটি হজমি শক্তি বাড়াতে সাহায্য করেএবং কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে
সাহায্য করে।
শেষ কথা
এ আর্টিকেলটিতে আমি আপনাকে জানালাম কলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা,পাকা কলার
ফেসপ্যাক,চুলের যত্নে কলার খোসা,কলা মুখে দিলে কি হয়,কাঁচা কলার খোসার উপকারিতা
সম্পর্কে বিস্তারিত।
আপনি যদি আপনার মনে থাকা সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে থাকেন তাহলে এমন কার্যকরি
আর্টিকেল পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিসিট করুন এবং বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন ।
ধন্যবাদ ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url