তৈলাক্ত ত্বকে নিম পাতার ব্যবহার করে ত্বককে করুন চকচকে ও উজ্জ্বল

আপনার ত্বক যদি তৈলাক্ত হয় তাহলে জানুন তৈলাক্ত ত্বকে নিম পাতার ব্যবহার করে ত্বককে করুন চকচকে ও উজ্জ্বল ।
তৈলাক্ত ত্বকে নিম পাতার ব্যবহার করে ত্বককে করুন চকচকে ও উজ্জ্বল

এছাড়াও আর বিস্তারিত জানতে নিম পাতার ব্যবহার ,চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার, ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার ও  তৈলাক্ত ত্বকে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে সম্পুর্ন পড়ুন । 

ভুমিকা

নিম পাতা সৃষ্টিকর্তার এমন একটি দান যা প্রাচীনকাল থেকেই মানব জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই ব্যবহার হয়ে আসছে মানব জীবনের উপকার হিসেবে। নিমগাছ মূলত বাংলাদেশ পাকিস্তান সহ ভারতীয় উপমহাদেশের দেশগুলোতে পাওয়া যায়। 

নিমের অনেক গুণের কারণে এটি আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা সৃষ্টি করেছে। ঔষধি গুণসম্পন্ন এই পাতার ব্যবহার শুধু স্বাস্থ্য রক্ষায় নয়, কৃষি, রূপচর্চা এবং গৃহস্থালির কাজেও অনন্য ভূমিকা পালন করে। প্রাকৃতিক জীবাণুনাশক হিসেবে নিম পাতার খ্যাতি বিশ্বব্যাপী। আপনার ত্বক যদি লাগতো অথবা ব্রণ অথবা আপনার ত্বকে যদি চুলকানি থাকে তাহলে আপনার জন্য।

কারণ এই আর্টিকেলটিতে আমি আপনাকে জানানোর চেষ্টা করবো ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার,চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার সহ তৈলাক্ত ত্বকে নিম পাতার ব্যবহার কিভাবে করবেন এ ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য - চলুন তাহলে নিম পাতার ব্যবহার দিয়ে শুরু করি

নিম পাতার ব্যবহার

নিম পাতার বহু ঔষধি গুণাবলীর কারণে নিম পাতা প্রাচীনকাল থেকে আমাদের সমাজে অনেক বেশি প্রচলিত একটি পাতা। নিম পাতা বিভিন্ন ধরনের অসুস্থতা নিরাময় থেকে শুরু করে আমাদের বাড়ি এবং আমাদের আবহাওয়ার বাতাস পরিষ্কার রাখার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে চলুন আমরা এখন নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে জানি -

প্রাচীনকাল থেকে নিম পাতার ব্যবহার হয়ে আসে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে। নিম পাতার ব্যবহার করা যেতে পারে অনেক ক্ষেত্রে এটি আমাদের তোকে সুস্থ ও স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। এটি বেটে ত্বকে দেওয়া যেতে পারে আবার এটির পিছে রস করে খাওয়া যেতে পারে।
 এই নিম পাতার রস অনেক ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অনেক উপকারী কারণে ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করে থাকে। কারো যদি হজমের সমস্যা থাকে তাহলে নিমপাতা এর রস খেলে হজম এর সমস্যা থেকে বাঁচতে পারবে। 
নিম পাতার ব্যবহার

এছাড়াও নিমপাতা কৃষিতে পোকামাকড় দমনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। পেটে জমির আশেপাশে ছিটিয়ে দিলে পোকামাকড় আসতে পারে না কারণ এটি অত্যাধিক পরিমাণে তিক্ত।ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার হয়। তৈলাক্ত ত্বকে নিম পাতার ব্যবহার হয়। 

জ্বর ও ঠান্ডা অথবা মুখের অসুস্থতার কারণে এই নিমপাতা ব্যবহার করা হয়। রূপচর্চায় নিম পাতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে ত্বক এর গ্লো ধরে রাখতে সাহায্য করে নিমপাতা। চলুন এখন আমি আপনাকে জানাই চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার কিভাবে করবেন তা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য -

চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার

চুলকানি একটি টক জনিত সমস্যা। এটি সাধারণত গরমের সময় বেশি দেখা দেয় আবার অনেকের ক্ষেত্রে শীতের সময় কয়েকদিন যাবত গোসল না করার ক্ষেত্রেও দেখা দিতে পারে। আবার অনেকের ক্ষেত্রে তো এন্টিব্যাকটেরিয়া অথবা ফান্ডকে কারণেও সৃষ্টি হতে পারে। চুলকানি রক্তে আমাদের জন্য অস্বস্তিকর এবং কষ্টদায়ক। নিম পাতা চুলকানির জন্য একটি আদর্শ ব্যাকটেরিয়াল হিসেবে পরিচিত। চলুন চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত জানাই -

নিম পাতার মধ্যে থাকে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল অথবা আন্টিফাঙ্গাল যা সহজেই শরীরে উৎপন্ন দাঙ্গাল এবং ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। কিছু তাজা নিম পাতা নিন এবং তা পানিতে সেদ্ধ করুন। এরপর এটি ঠাণ্ডা হয়ে গেলে, ওই পানি দিয়ে আক্রান্ত স্থানে কল করো না অথবা হালকা করে লাগিয়ে দিন।
 অথবা আপনি এর বিপরীতে একটি করতে পারেন হালকা করে নিম পাতাগুলো করুন এবং পানির সাথে মিশ্রণ করে একটি ভালো করে পেস্ট তৈরি করুন এবং তার শরীরের স্থানে বা চুলকানির অংশে লাগান এবং ২০ থেকে ৩০ মিনিট পর পরিষ্কার নিরাপদ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে এক সপ্তাহ করতে পারলেই আশা করা যায় আপনার চুলকানি ভালো হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ। 

যে কোন ধরনের এলার্জির কারণে ত্বকে চুলকানির সৃষ্টি হতে পারে। নিম পাতা তার এলার্জি প্রতিরোধ গুণের এলার্জি প্রতিরোধ করতে পারে। এর জন্য আপনি কিছু নিমপাতা নিন, পরিষ্কার করে ধুয়ে নিন তারপরে এটি ব্লেন্ডারের ব্লেন্ড করুন অথবা পাটাই বেটে নিয়ে আক্রান্ত স্থানে ৩০ মিনিট লাগিয়ে রাখুন অতঃপর নিরাপদ পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এভাবে এক সপ্তাহ থেকে ১০ দিন আপনার শরীরের রেগুলার এই পেস্ট টি লাগালে আপনি চুলকানি থেকে মুক্ত হতে পারবেন। 

একইভাবে মশার কামড়ের কারণে আমাদের শরীরে অনেক ক্ষেত্রে চুলকানি দেখা যায় এটি বিশেষ করে ছোট বাবুদের অনেক বেশি হয়ে থাকে। আপনার যদি মশার কামড়ে কারণে চুলকানি হয়ে থাকে একই নিয়মে আপনি কিছু নিম পাতা নিবেন এবং তা পরিষ্কার করে ধুয়ে নিবেন তারপরে সেটি সুন্দর করে আপনার পাটায় বেটে নিবেন তারপরে আক্রান্ত স্থানে ৩০ মিনিট রেখে দিবেন অতঃপর নিরাপদ পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এভাবেই আপনি পাঁচ থেকে সাত দিন করলে আপনার আক্রান্ত স্থানের চুলকানি ইনশাল্লাহ ঠিক হয়ে যাবে।

ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার

ওপরে এতক্ষণ আমি আপনাকে চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে জানাচ্ছিলাম চলুন এখন আমি আপনাকে জানাবো ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার।

১. নিম পাতার সাথে মধুর মিশ্রণঃ মধু ত্বকের জন্য একটি মশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে এর জন্য নিম পাতা ও মধুর মিশ্রণে ব্রণ দূর হয়। এর জন্য আপনাকে এক চা চামচ মধু এবং কিছু তাজা নিম পাতা নিয়ে বেটে পেস্ট করে ফেলতে হবে। অতঃপর পেজটি ব্রনের আক্রান্ত স্থানে 15 থেকে 20 মিনিট লাগিয়ে রাখুন অতঃপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার

২. নিম পাতা ও গোলাপজল এর মিশ্রণঃগোলাপজল ত্বকে শান্ত রাখে এবং প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বক থেকে ময়লা আবর্জনা দূরীভূত করতে সাহায্য করে। এর জন্য অবশ্যই আপনাকে কিছু তাহাজান নিমপাতা নিয়ে তা গুঁড়ো করে গোলাপ জলের সাথে মিশ্রণ করতে হবে এবং তা ২৫ থেকে ৩০ মিনিট আপনার ব্রনের আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে রাখতে হবে এবং শেষে নিরাপদ এবং পরিষ্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে আপনার ত্বক ধৌত করতে হবে।
৩.নিম পাতা ও হলুদ এর মিশ্রণঃ হলুদ আমাদের দেহের প্রদাহ এবং ব্রোন কমাতে সাহায্য করে। এর জন্য নিম পাতা ও হলুদের মিশন একটি কার্যকারী ব্রণের ক্ষেত্রে। এর জন্যই প্রথমে আপনাকে এক চা চামচ হলুদ গুঁড়ো এবং কিছু তাজা নিমপাতা পেস্ট করে ফেলতে হবে এবং আপনার আক্রান্ত স্থানে অথবা ব্রণ এ ২০ থেকে ২৫ মিনিট লাগিয়ে রাখতে হবে এবং অতঃপর ঠাণ্ডা এবং নিরাপদ পানি দিয়ে ধৌত করতে হবে।।

৪.নিম পাতার পেস্টঃ পাতার গুড়ো অথবা নিম পাতার পেস্ট ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে। এর জন্যই প্রথমে কিছু তাজা নিমপাতা নিন এবং তা পেস্ট করে ফেলুন। বেস্ট টি আপনার ব্রণের আক্রান্ত অংশে ২০ থেকে ৩০ মিনিট দিয়ে রাখুন। অতঃপর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখটি ধুয়ে ফেলুন।

নিয়মিত নিম পাতার ব্যবহার ত্বককে জীবাণুমুক্ত রাখে এবং ত্বকের স্বাভাবিক সৌন্দর্য বজায় রাখে।
এতক্ষণ আমি আপনাকে জানাচ্ছিলাম ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার ; চলুন এখন আমি আপনাকে জানাবো তৈলাক্ত ত্বকে নিম পাতার ব্যবহার কিভাবে করবেন তা সম্পর্কে বিস্তারিত-

তৈলাক্ত ত্বকে নিম পাতার ব্যবহার

তৈলাক্ত ত্বক অতিরিক্ত তেলের কারণে ব্রণ এবং অন্যান্য ত্বকের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। নিম পাতার নিয়মিত ব্যবহার ত্বকের অতিরিক্ত তেল দূর করতে সাহায্য করে এবং ত্বককে পরিষ্কার ও সতেজ রাখতে সাহায্য করে। নিচে তৈলাক্ত ত্বকের জন্য নিম পাতার ব্যবহার নিয়ে কিছু পদ্ধতি দেওয়া হলোঃ

১. নিম পাতার পেস্ট দিয়ে স্কিন ক্লিনিংঃ নিম পাতার পেস্ট মুখের তৈলাক্ত ভাব দূর করতে সাহায্য করে। এর জন্যে প্রথমে কিছু তাজা নিম পাতা নিন অতঃপর নিম পাতা পরিস্কার করে নিন।এর পর বেটে পেস্ট করে আপনার মুখে ২০-৩০ মিনিট লাগিয়ে অপেক্ষা করুন তারপর ঠান্ডা পরিস্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

২. নিম পাতা ও মধুর মিশ্রনঃ কয়েকটি তাজা নিম পাতা নিন তারপর এক চা চামচ মধু মধু নিন। তারপরে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করুন অথবা পাটাই বেটে নিন। তারপরে এটি আপনার মুখে ২০ থেকে ২৫ মিনিট লাগিয়ে রাখুন অতঃপর ঠান্ডা এবং পরিস্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৩. নিম পাতা ও চন্দন পেস্টঃ নিমপাতা ও চন্দন তৈলাক্ত ত্বকের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মিশ্রণ। প্রথমে জন্য আলাদাভাবে পেস্ট করুন এবং নিমপাতা আলাদা করে পেস্ট করুন অতঃপর দুইটি একসাথে মিক্স করুন এবং একসাথে আবার বেটে নিন। তারপর ১৫ থেকে ২০ মিনিট আপনার মুখে লাগিয়ে রাখুন অতঃপর ঠাণ্ডা এবং পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

৪. নিম পাতা সেদ্ধ দিয়ে মুখ ধোয়াঃ কয়েকটি তাজা নিমপাতা নিম এবং নিরাপদ পানি নিন তারপরে পানির মধ্যে নিম পাতাগুলো দিয়ে সিদ্ধ করুন। পানি যখন হালকা কুসুম হয়ে যাবে তখন তা বিয়ে বারবার মুখ ধুতে থাকুন।

শেষ কথা 

এই আর্টিকেলটিতে আমি আপনাকে তৈলাক্ত ত্বকে নিম পাতার ব্যবহার,ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহারসহ চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানিয়েছি আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url