ভুল উপায়ে মেহেদী পাতা ব্যাবহার করছেন না তো
ভুল উপায়ে মেহেদী পাতা
ব্যাবহার
করছেন না তো এটি জানতে এই আর্টিকেল টি পড়ুন ।
এছাড়াও মেহেদী পাতা সম্পর্কে আপনার মনে থাকা সকল প্রশ্ন সহ আরো মেহেদি পাতার রস খেলে কি হয় ,মেহেদী পাতার উপকারিতা, মেহেদি পাতার অপকারিতা ও মেহেদি পাতা দিয়ে চুলের যত্ন সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন ।
এছাড়াও মেহেদী পাতা সম্পর্কে আপনার মনে থাকা সকল প্রশ্ন সহ আরো মেহেদি পাতার রস খেলে কি হয় ,মেহেদী পাতার উপকারিতা, মেহেদি পাতার অপকারিতা ও মেহেদি পাতা দিয়ে চুলের যত্ন সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন ।
ভুমিকাঃ
মেহেদী হলো এক
প্রাচীন
ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির একটি প্রাকৃতিক প্রতীক হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে।
মেহেদী এক ধরনের গাছ এই গাছের পাতাকে আমরা মেহেদী বলে থাকি। মেহেদির শুধুমাত্র
কাজেই হাতের আঙ্গুল এবং রং বা নকশা তৈরি করা না অতীত থেকে বর্তমানে এটি অনেক
সংস্কৃতির সাথে জড়িয়ে আছে।
বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়া ও
মধ্যপ্রাচ্যে
মেহেদির প্রচলন ব্যাপকভাবে সমাদ্রিত। এ মেয়েদের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বিশ্বাস,
সংস্কৃতি ইত্যাদি। চলুন এই আর্টিকেলে আমি আপনাকে জানাই মেহেদী পাতার উপকারিতা,
মেহেদি পাতার অপকারিতা ও মেহেদি পাতা দিয়ে চুলের যত্ন কিভাবে করবেন সে ব্যাপারে
বিস্তারিত তথ্য -
মেহেদী পাতা
মেহেদী পাতা প্রাচীনকাল থেকে একটি বিশেষ সংস্কৃতি এবং শেষ বিশ্বাসের মাধ্যমে
আমাদের সমাজে প্রচলিত। তবে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সংস্কৃতির মাধ্যমে হাত
রাঙানো। মেহেদী গাছের বৈজ্ঞানিক নাম Lawsonia inermis।
এটি মূলত উষ্ণ
অঞ্চল যেমন
দক্ষিণ এশিয়া মধ্যপ্রাচ্য এই গাছটি বেশি জন্মে থাকে। এই গাছ থেকে পাতা সংগ্রহ
করে তা পেস্ট করে হাতে লাগানোই হলো আমাদের সংস্কৃতি। মেহেদি পাতায় লেসন নামক এক
ধরনের রাসায়নিক পদার্থ থাকার কারণে এটি যখন আমরা পেস্ট করে আমাদের হাতে লাগিয়ে
রাখি তখন এটি লালচে কমলা বা ক্ষয়ের রং ধারণ করে যা আমাদের হাতের সৌন্দর্যকে
বৃদ্ধি করে।
আরো পড়ুনঃ
প্রেমিকার মন জয় করবেন কিভাবে ?
এটি প্রাকৃতিক হওয়ার কারণে ত্বকে কোন প্রকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি
হয় না বরং ত্বকের শীতলতা অনুভব হয়। মেহেদী পাতা শুধু আমাদের জন্যে রূপচর্চার
উপাদান নয়,বরং এটি একটি প্রকৃতির আশীর্বাদ। এর শীতলতা প্রদানকারী বৈশিষ্ট্য যেমন
শারীরিক স্বস্তি দেয় তেমনি এর রঙ মানুষের আবেগ ও আনন্দকে প্রকাশ করে। মেহেদী
পাতার উপকারিতা অনেক৷ প্রাচীনকাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত মেহেদী পাতা সৌন্দর্য ও
সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে রয়ে গেছে।
মেহেদি পাতার রস খেলে কি হয়ঃ
মেহেদি পাতা যেহেতু একটি প্রাকৃতিক উপাদান। এটির রহস্য অনেক মানুষ খেয়ে থাকে।
মেহেদি পাতার রসে অনেক
উপকারিতা
রয়েছে তারপরেও এটি ধারণা তো বাহ্যিকভাবে ব্যবহারের কারণে মানুষ খেতে অস্বস্তি
বোধ করে। তবে মেহেদী পাতার রস চিকিৎসার জন্য হলেও এটার কিছু নিয়ম রয়েছে
নিয়মগুলো অবশ্যই মেনে খাওয়া উচিত - মেহেদি পাতার রস খেলে কি হয়
১.জ্বর নিরাময়েঃ প্রাকৃতিক শীতলতা থাকে এর কারণে মেহেদী পাতা জ্বর কমাতে বা জ্বর
নিরাময় করতে সাহায্য করে থাকে।
২. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেঃ এক গবেষণায় দেখা গেছে মেহেদী পাতার রস রক্তের
শর্করার পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে থাকে।
৩. মেহেদি পাতার রসঃ মেহেদী পাতার রস পিত্ত জনিত সমস্যার সমাধান করতে সাহায্য করে
অর্থাৎ মেহেদী পাতার রস খেলে আপনার লিভার ভালো থাকবে এবং জন্ডিসের কোন সমস্যা
থাকলে জন্ডিস ভালো করতে সাহায্য করে।
৪. পেটের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করেঃ মেহেদী পাতার অসাধারণ তো পেটের পিঠা গ্যাস
অম্বল ইত্যাদি ধরনের সমস্যার ওষুধ হিসেবে ভালো কার্যকারী ভূমিকা পালন করে।
সতর্কতাঃ মেহেদী পাতার রস খাওয়ার সময় অবশ্যই অল্প পরিমাণে অথবা রেজিস্টার
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়া। মেহেদী পাতার রস বাসে এসে বাচ্চাদের এবং
গর্ভবতী মাঠের জন্য খাওয়া একদমই ঠিক নয় এবং মেহেদির রস অনেক ক্ষেত্রে অনেকের
এলার্জি সৃষ্টি করতে পারে এর জন্য অবশ্যই অবশ্যই আপনার রেজিস্টার চিকিৎসকের
সাহায্য নিয়ে তারপরে মেহেদির পাতার রস গ্রহণ করা উচিত।
মেহেদী পাতার উপকারিতাঃ
এতক্ষণ আমি আপনাকে মেহেদি পাতার রস খেলে কি হয় এ সম্পর্কে জানাচ্ছিলাম এখন আমি
আপনাকে জানাবো মেহেদী পাতার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য -মেহেদি পাতা একটি
প্রাকৃতিক উপাদানের অনেক অনেক উপকারিতা রয়েছে। কয়েকটি উল্লেখযোগ্য উপকারিতা;
ত্বকের ক্ষেত্রে মেহেদি পাতার উপকারিতা অনেক রয়েছে।
১.ঘামাচি দূর করণঃ মেহেদী পাতার রসে অথবা মেহেদি পাতায় রয়েছে
অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুন সম্পূর্ণ আশা অনেক পদার্থ যা আমাদের দেহের ঘামাচি সহ
আরো অন্যান্য ব্যাকটেরিয়া গুলোকে ধ্বংস করতে সাহায্য করে এবং আমাদের ত্বককে
স্বাভাবিক ও সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
২.ত্বকের শীতলতা প্রদানঃ যদি আপনার ত্বকের কোন জায়গায় জ্বালাপোড়া অথবা প্রদাহ
হয় তাহলে কয়েকটি মেহেদি পাতা নিয়েন এবং তা পেস্ট করে বেটে নিন এবং
জ্বালাপোড়ায় যেখানে করছে সেখানে লাগিয়ে দিন দেখবেন খুব শীঘ্রই আপনার ত্বক কে
শীতলতা দিবে মেহেদী পাতা।
আরো পড়ুনঃ
হাত পা ফর্সা হওয়ার ডাক্তারি ক্রিম
৩.ক্ষত নিরাময়ঃ ত্বকের কাটা বা ক্ষত যুক্ত স্থানে যদি মেহেদী পাতার পেস্ট বা
মেহেদী পাতার রস ব্যবহার করা হয় তাহলে সেটি খুব দ্রুতই সেরে ওঠে। ব্যবহার করার
প্রথমে একটু জ্বালাপোড়া করতে পারে তবে এটি সাময়িক, কিন্তু খুব শীঘ্রই
জ্বালাপোড়া বন্ধ হয়ে যায় এবং কত নিরাময় হতে সাহায্য করে।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে গর্ব অবস্থায় মেহেদী ব্যবহার করলে অনেক উপকারিতা পাওয়া
যায়। গর্ভবতী অবস্থায় অনেক নারীর পা ফুলে যায় এবং শরীরের ব্যথা সৃষ্টি হয় সেই
ব্যথা নিরাময়ের জন্য মেহেদির পাতা পেস্ট করে সেই অংশে লাগিয়ে রাখলে সেই ব্যথা
ভাল হয়ে যায়।
আমার মেহেদি পাতার স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে অনেক ভূমিকা পালন করে; স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে
যা নিরাময় করতে সাহায্য করে লিভারে যদি কোন সমস্যা দেখা দেয় সেটি হতে পারে
জন্ডিস বা অন্য কোন রোগ সে ধরনের রোগ সারাতে সাহায্য করে মেহেদী পাতার রস। আবার
অ্যান্টিফাঙ্গাল থাকার কারণে শরীরের জীবাণুকে ভেতর থেকে মারতে সাহায্য করে যদি
মেহেদী পাতার রস খাওয়া হয় তাহলে।
মেহেদী পাতার রস পেটের কোষ্ঠকাঠিন্য পেটের গ্যাস আমাশয় অম্বল ইত্যাদি দূর করতে
সাহায্য করে। মেহেদি পাতা দিয়ে চুলের যত্ন করা হয়। এতক্ষণ আমি আপনাকে
জানাচ্ছিলাম মেহেদী পাতার উপকারিতা সম্পর্কে চলুন এখন আমি আপনাকে জানাবো মেহেদি
পাতার অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য -
মেহেদি পাতার অপকারিতা
মেহেদি পাতার যেমন উপকারিতা রয়েছে তার সাথে কিছু অপকারিতা রয়েছে। তবে এগুলো যদি
আমরা নিয়ম মাফিক মেনে চলে তাহলে অপকারিতা থেকে আমরা বাঁচতে পারব।
মেহেদি পাতা অনেকের ত্বকের জন্য খুব একটা উপকারী হয়ে থাকে না কারণ অনেকের ত্বকে
মেহেদি পাতা এলার্জি সৃষ্টি করতে পারে যাদের অ্যালার্জি আছে তাদের এটিকে ব্যবহার
করা উচিত নয়। অতিরিক্ত মেহেদী পাতা ব্যবহারের কারণে ত্বকের রং পরিবর্তন হয়ে
যেতে পারে।
পাতা অত্যাধিক পরিমাণে ব্যবহার করতে থাকেন তাহলে এটি আপনার চুলের জন্য অনেক
ক্ষতি সাধন করে দাঁড়াবে কারণ এটি বেশি ব্যবহারের ফলে চুলকে শুষ্ক এবং রুক্ষ করে
দেয়। মেহেদি পাতার রস অতিরিক্ত পরিমাণে ব্যবহার করলে এটি পাকস্থলীতে গিয়ে হজম
না হয়ে এটি বিষক্রিয়ার সৃষ্টি করতে পারে যা মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে এর
জন্য মেহেদী পাতার রস খাওয়ার আগে অবশ্যই রেজিস্টার্ড চিকিৎসক এর পরামর্শ নেওয়া
উচিত।
শিশুদের একেবারে মেহেদী পাতা ইউজ করা উচিত নয় কারণ গবেষণায় দেখা গেছে যে
ছোট শিশুদের মেহেদী দেওয়ার ফলে তাদের শরীরে গ্লুকোজ সিক্স ফসপেট ডিহাইড্রোজেনেজ
এর ঘাটতির কারণে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়। এর ফলে বাচ্চাদের মেয়েদের ব্যবহার করা
উচিত না। মেহেদি পাতার সঠিক মাত্রা এবং ব্যবহারের পদ্ধতি মেনে চলুন।
বাজার থেকে কেনা প্রস্তুত মেহেদি পেস্টে রাসায়নিক মিশ্রিত থাকতে পারে। তাই
প্রাকৃতিক ও বিশুদ্ধ মেহেদি পাতা ব্যবহার করুন। এতক্ষণ আমি আপনাকে মেহেদি পাতার
অপকারিতা সম্পর্কে জানাচ্ছিলাম এখন আমি আপনাকে জানাবো মেহেদি পাতা দিয়ে চুলের
যত্ন।
মেহেদি পাতা দিয়ে চুলের যত্নঃ
পাতা চুলের যত্নে এক কার্যকরী উপাদান এটি চুলের গোড়া শক্ত করে চুলকে রং করে ও
চুলকে স্বাস্থ্যকর করে গড়ে তোলে। চলুন মেহেদি পাতা দিয়ে চুলের যত্ন কিভাবে
করবেন তা জানাই-
মেহেদী পাতা প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে ব্যবহার করা হয় আপনার মাথার খুশকি দূর
করে চুল পড়া রোধ করে চুলকে শক্ত করে, চুলের রং করে এবং চুলকে বড় করতে সাহায্য
করে।
পদ্ধতি -১ঃ কিছু তাজা মেহেদী পাতা নিন এবং তাতে সামান্য পানি যোগ করে পেস্ট করে
রাখুন। অতঃপর এটি চুলের গোড়ায় সুন্দর করে লাগিয়ে রাখুন, এক ঘন্টা থেকে ২ ঘন্টা
পর নিরাপদ ও পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
আরো পড়ুনঃ
কালো থেকে ফর্সা হওয়ার উপায়
পদ্ধতি -২ঃ রঙ গাড় করার জন্যে
মেহেদি পাতার পেস্ট করুন এবং তাদের চা বা কফি এবং এক টুকরো লেবুর রস মিশিয়ে
একরাত রেখে দিন। পরদিন চুলে দিন থেকে চার ঘন্টা লাগিয়ে রেখে দিন এবং তিন থেকে
চার ঘন্টা পর ধুয়ে ফেলুন।
পদ্ধতি-৩ঃ খুশকি দূর করার জন্য
সর্ব প্রথমে মেথি বেশ সারারাত ভিজিয়ে রাখুন পরের দিন মেথি এবং মেহেদী একসাথে
পেস্ট করুন সামান্য পরিমাণে দই এর মিশ্রন যোগ করুন টোপর চুলে লাগিয়ে রাখুন দুই
থেকে তিন ঘণ্টা অতঃপর ধুয়ে ফেলুন।
সর্তকতা: মেহেদী ব্যবহারের আগে অবশ্যই আপনার ত্বকের কোন একটি অংশ পরীক্ষা করে
দেখে নিন যে এটাতে অ্যালার্জি আছে কিনা এটা যদি এলার্জি থাকে তাহলে আপনি মেহেদী
ব্যবহার করবেন না। আর যদি এলার্জি না থাকে তাহলে অবশ্যই মেয়েদের ব্যবহার করতে
পারবেন। এবং ঘন ঘন চুলে মেহেদী ব্যবহার করার ফলে চুলের রুক্ষতা ও শুষ্কতা দেখা
দিতে পারে এর জন্য রেগুলার মেহেদি ব্যবহার করা যাবে না।
শেষ কথাঃ
এই আর্টিকেলটিতে আমি আপনাকে মেহেদি পাতার রস খেলে কি হয়,মেহেদি পাতা দিয়ে চুলের
যত্ন,মেহেদি পাতার অপকারিতাসহ মেহেদী পাতার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য
জানালাম। আশা করি এই আর্টিকেল টি পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url