ডিম খাওয়ার অবিশ্বাস্য উপকারিতা সম্পর্কে জানুন

ডিম হলো এক প্রাকৃতিক সুপারফুড, যা স্বাদ ,গুন ও পুষ্টিতে ভরপুর। প্রতিদিন মাত্র এক বা দুটি ডিম খাওয়া আপনার শরীরের জন্য বিশাল উপকার বয়ে আনতে পারে । ডিম খাওয়ার অবিশ্বাস্য উপকারিতা সম্পর্কে জানুন এই আর্টিকেল টি তে ।
ডিম খাওয়ার অবিশ্বাস্য উপকারিতা সম্পর্কে জানুন

 
এছাড়াও ব্রয়লার মুরগির ডিমের ক্ষতিকর দিক,দেশি মুরগির ডিমের উপকারিতা ,কোন ডিমে পুষ্টি বেশি,একটা ডিমে কত ক্যালরি থাকে ও সিদ্ধ ডিম খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন । 

ভুমিকা

ডিম আমাদের দৈনন্দিন খাবারের একটি পরিচিত গুরুত্বপূর্ণ খাবার। এটি শুধুমাত্র সুস্বাদু পুষ্টিকর নয় এটি বিভিন্ন খাবারের সাথে বহুমুখী ব্যবহার রয়েছে। বর্তমান যুগে নানা ধরনের ঔষধ ব্যবহারের কারণে ডিমের কিছু উপকারিতা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে আবার অনেক উপকারিতা ও বৃদ্ধি পাচ্ছে চলুন এই আর্টিকেল টি তে আমি আপনাদের জানানোর চেষ্টা করি ব্রয়লার মুরগির ডিমের ক্ষতিকর দিক,দেশি মুরগির ডিমের উপকারিতা,কোন ডিমে পুষ্টি বেশি, একটা ডিমে কত ক্যালরি থাকে ও সিদ্ধ ডিম খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত।

ব্রয়লার মুরগির ডিমের ক্ষতিকর দিক

আর্টিকেলের প্রথম অংশে আমি আপনাকে জানাবো ব্রয়লার মুরগির ডিমের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে বিস্তারিত।বয়লার মুরগির ডিম প্রাকৃতিক ভাবে উৎপাদিত না হওয়ার ফলে এই ডিম টির কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে। বয়লার মুরগির ডিম সাধারণত বাজারে সহজলভ্য ও স্বল্প মূল্যে পাওয়া যায় না তবে এ ধরনের ডিমের কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে।
 কারণ সাধারণত বয়লার মুরগি ফার্মে চাষ করা হয় এক্ষেত্রে চাষিরা বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ মুরগিকে প্রদান করে থাকেন যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হয়ে থাকে চলুন জানি ব্রয়লার মুরগির ডিমের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে। বয়লার মুরগির মাংস উৎপাদনের জন্য প্রায় চাষিরা অধিক লাভের জন্য কিছু এন্টিবাইটিক ও কিছু হরমোন টাইপের ওষুধ প্রদান করে থাকেন।

 এর রাসায়নিক উপাদানগুলো বিশেষ করে মুরগির হরমোন জমা হয়ে থাকতে পারে যা আমাদের মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর। এর জন্যই অতিরিক্ত পরিমাণে বয়লার মুরগির ডিম খাওয়া উচিত নয় কারণ এটি মানবদেহের দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা তৈরি করতে পারে। 

এর ফলে যে সমস্যা হতে পারে তার মধ্যে একটি হলো অ্যান্টিবায়োটিক কোন ঔষধ আপনার দেখে কাজ করবে না এর জন্যই আপনার উচিত বয়লার মুরগির ডিম বুঝে শুনে ক্রয় করা। হ্যাঁ তবে আপনি একটি উপায় খেতে পারবেন যদি এটি আপনি বাসায় লালন পালন করেন এবং বাসাতে থাকা যে খাবার গুলো খাওয়ান এতে যদি কোন অ্যান্টি বায়োটিকের দেওয়া না থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি সেই মুরগীর ডিম গুলো খেতে পারবেন এবং সেই দিনগুলো আপনার জন্য সুস্বাস্থ্যকর হবে।

এছাড়াও বয়লার মুরগির খাদ্যাভ্যাসের কারণে বয়লার মুরগি খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায় যাতে করে বয়লার মুরগির চর্বির পরিমাণ বেশি থাকে অতিরিক্ত চর্বি আমাদের হাটের ক্ষতি করতে পারে এর জন্য আপনার উচিত বয়লার মুরগির ডিম অথবা বয়লার মুরগির অল্প পরিমাণে খাওয়া। 

এছাড়াও বয়লার মুরগিকে কৃত্রিম খাবার খাওয়ানো হয় যা একজন সুস্থ মানুষের জন্য স্বাভাবিক নয় এর জন্য বয়লার মুরগির ডিম অথবা বয়লার মুরগির মাংস একটু বেশি খাওয়া উচিত নয়। এতক্ষণ আমি আপনাকে জানাচ্ছিলাম ব্রয়লার মুরগির ডিমের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে বিস্তারিত চলুন এখন জানাই দেশি মুরগির ডিমের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত।

দেশি মুরগির ডিমের উপকারিতা

দেশি মুরগির ডিম পুষ্টি গুণে ভরপুর একটি খাবার। চলুন আর্টিকেলের এই অংশে আমি আপনাকে দেশি মুরগির ডিমের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাই।

হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়ঃ দেশি মুরগির ডিমের ও থাকে হচ্ছে আন্টি অক্সিডেন্ট। এছাড়াও থাকে ভিটামিন ই ও সেলেনিয়াম যা আমাদের হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একটি কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং খারাপ কোলেস্টেরল কামাই এর জন্যই রোগীদের ডাক্তারেরা সাধারণত দেশি মুরগির ডিম সাজেস্ট করে থাকেন।
চোখের স্বাস্থ্য বৃদ্ধি করেঃ বেশি মুরগির ডিম রয়েছে ভিটামিন এ এবং লুটিন নামক এক ধরনের উপাদান যা আমাদের চোখের জন্য অনেক উপকারী। এবং এই উপাদানগুলো আমাদের চোখের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায় এবং অনেকের বয়সের কারণে তোকে সমস্যা দেখা দেয় সে সমস্যাগুলো ঠিক করতে সাহায্য করে।
দেশি মুরগির ডিমের উপকারিতা

ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ দেশি মুরগির ডিমে অতিরিক্ত পরিমাণে প্রোটিন থাকে যার ফলে দেশি মুরগির ডিম মানুষকে অধিক তৃপ্তি দান করে এবং আপনাকে বেশি খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমিয়ে দেবে যার ফলে আপনার ক্ষুধা কম লাগবে এবং আপনার ওজন কমতে সাহায্য করবে সাধারণ কথাই বলা যায় আপনার ওজনকে নিয়ন্ত্রণ করবে।

ত্বকের সুস্থতাঃ দেশি মুরগির ডিমে থাকা ভিটামিন এ ও জিংক ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী বাসায় অনেক উপাদান যা আমাদের শরীরে প্রতিটি ত্বককে সজীব রাখতে সাহায্য করে। তোকে যদি কোন প্রকার র‍্যাশ বা ব্রণ থাকে তাহলে এই উপাদানগুলো সেই র‍্যাশ বা ব্রণ কমাতে সাহায্য করে।

এছাড়া মুরগির ডিম রয়েছে ভিটামিন এ ভিটামিন বি টুয়েলভ ভিটামিন ডি, এছাড়াও আরো রয়েছে আয়রন জিংক ফসফরাসের মত খনিজ উপাদান যা শরীরের বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করে এবং দীর্ঘজীবন দিতে সাহায্য করে । 

এছাড়াও এটি হজমে অনেক উপকার করে আপনার যদি হজমে সমস্যা থাকে তাহলে আপনি দৈনিক একটি করে মুরগির ডিম সিদ্ধ করে অথবা রান্না করে খেতে পারেন এর ফলে যেমন আপনার হজমে সমস্যা ঠিক হবে এবং আপনার পেটের পেশিকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে। 

সব মিলিয়ে দেশি মুরগির ডিম একটি প্রাকৃতিক ও পুষ্টিকর খাবার তবে অধিক গ্রহণ করা কখনোই উচিত নয় অধিক গ্রহণ করলে এর ফলে ক্ষতি হতে পারে। এতক্ষন আমি আপনাকে জানাচ্ছিলাম দেশি মুরগির ডিমের উপকারিতা চলুন এখন আমি আপনাকে জানাই কোন ডিমে পুষ্টি বেশি।

কোন ডিমে পুষ্টি বেশি

আপনি যদি জানতে চান কোন ডিমে পুষ্টি বেশি তাহলে এই আর্টিকেলটা শুধুমাত্র আপনার জন্য। পুষ্টির দিক থেকে বিভিন্ন মুরগির ডিমের পার্থক্য রয়েছে। বয়লার মুরগির কিছু আলাদা পুষ্টিগুণ রয়েছে আবার দেশি মুরগিরও কিছু বিভিন্ন পুষ্টিগুণ রয়েছে।

তবে দেশি মুরগির খুব একটি ক্ষতিকর দিক নাই দেশি মুরগিতে প্রোটিনের পরিমাণ বেশি ভিটামিন এবং খনিজ পরিমাণ বেশি থাকে এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকে এবং হালকা পরিমাণে ফ্যাট চর্বি থাকে।কিন্তু বয়লার মুরগির ডিমের প্রোটিন থাকে ভিটামিন ও খনিজ থাকে তারপরেও বেশি পরিমাণে চর্বি থাকে যার ফলে সাধারণত আমাদের জন্য এই মুরগির ডিমটি অল্প পরিমাণে খাওয়া উচিত অথবা একেবারেই পরিহার করা উচিত। 
তাহলে সামগ্রিকভাবে বলতে পারি যে দেশি মুরগির ডিম প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হওয়ার ফলে এই ডিম পুষ্টিগুণ অধিক পরিমাণে থাকে এবং বয়লার মুরগী কৃত্রিমভাবে উৎপাদন করার ফলে এর পুষ্টিগুনি একটু কম এর জন্যই অবশ্যই আপনাকে আপনার খাদ্য তালিকায় দৈনিক একটি করে দেশি মুরগির ডিম রাখা উচিত এতে আপনার এবং আপনার পরিবারের সকলের দেহ ও মন সুস্থ থাকবে।

আর্টিকেলের এই অংশ আমি আপনাকে জানাচ্ছিলাম কোন ডিমে পুষ্টি বেশি চলুন আর্টিকেলের পরের অংশে আমি আপনাকে জানাই একটা ডিমে কত ক্যালরি থাকে।

একটা ডিমে কত ক্যালরি থাকে

চলুন আর্টিকেলের এই অংশে আমি আপনাকে জানানোর চেষ্টা করি একটা ডিমে কত ক্যালরি থাকে। একটি আদর্শ ডিমের সাইজ হয় পঞ্চাশ গ্রামের ওপর। এই ৫০ গ্রামের মধ্যে ৭০ থেকে ৭৫ ক্যালারি সম্পন্ন ভাবে থাকে। তবে মুরগির ডিমের সাইজের উপর ক্যালোরির পরিমাণ নির্ভর করতে পারে । চলুন এখন আপনারা আপনাকে জানাই ডিমের কোন অংশে কত ক্যালরি থাকে।

গোটা ডিমঃ একটি ভালো মানের একটি আদর্শ ডিমে প্রায় ৭০ থেকে ৭৫ ক্যালরি প্রোটিন থাকে.
ডিমের সাদা অংশঃ একটি ভাল মানের একটি আদর্শ ডিমের সাদা অংশে প্রায় ১৭ থেকে বিশ ক্যালরির মত প্রোটিন থাকে।
ডিমের কুসুমঃ ডিমের কুসুম ডিমের মূল অংশ যেটিতে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে প্রোটিন থাকে সেটি হলো ডিমের কুসুম এতে প্রায় ৫৫ থেকে ৬০ ক্যালোরি প্রোটিন থাকে। এতক্ষণ আমি আপনাকে জানাচ্ছিলাম একটা ডিমে কত ক্যালরি থাকে চলুন এখন আমি আপনাকে জানাবো সিদ্ধ ডিম খাওয়ার নিয়ম।

সিদ্ধ ডিম খাওয়ার নিয়ম

আপনি যদি সিদ্ধ ডিম খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে এই আর্টিকেলটিতে ক্লিক করে থাকেন তাহলে আপনি এই আর্টিকেলটিতে এসে কোন ভুল করেননি। কারণ এখন আমি আপনাকে জানাবো সিদ্ধ ডিম খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত। সিদ্ধ ডিম খাওয়ার পূর্ব সিদ্ধ ডিমকে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে তারপরে পানি দিয়ে চুলায় অথবা ওয়াটার হিটারে ৮ থেকে ১০ মিনিট সিদ্ধ করতে দিতে হবে।
সিদ্ধ ডিম খাওয়ার নিয়ম

এর বেশি সিদ্ধ করলে ডিমের কুসুমের রং পরিবর্তন হতে পারে এবং ডিমের পুষ্টিগুণ কমিয়ে দেয়। সিদ্ধ ডিম ঠান্ডা হয়ে গেলে ফ্রিজে সংরক্ষণ করে রাখা যায় তবে এটি গরম গরম খেয়ে নেওয়া উচিত। একটা বিষয় খেয়াল রাখবেন দৈনিক একটি থেকে দুইটির বেশি ডিম খাওয়া উচিত নয় এটা কোলেস্টেরলের হতে পারে। সিদ্ধ ডিম রুটি সবজি ছালার সাথে খেতে পারেন এতে আপনার পুষ্টির সম্পূর্ণ চাহিদা পূরণ হবে এবং শরীরের ভারসাম্য ঠিক থাকবে।

শেষ কথা 

এই আর্টিকেল টি তে আমি আপনাদের জানানোর চেষ্টা করেছি ব্রয়লার মুরগির ডিমের ক্ষতিকর দিক,দেশি মুরগির ডিমের উপকারিতা,কোন ডিমে পুষ্টি বেশি, একটা ডিমে কত ক্যালরি থাকে ও সিদ্ধ ডিম খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত। আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন। ধন্যবাদ এতক্ষণ মনোযোগ দিয়ে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার জন্য।





এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url