ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা - মোবাইল ফোনের ভালো দিক
মোবাইল ফোন এখন স্মার্ট ফোন নামে পরিচিত । এই স্মার্ট ফোন যেমন আমাদের স্মার্ট
করে তুলেছে তেমনি এই স্মার্ট ফোন আমাদের জীবনের উপর প্রভাব ফেলেছে । এই আর্টিকেল
টি মনোযোগ সহকারে পড়লে আপনি জানতে পারবেন ছাত্র জীবনে কি মোবাইল আমাদের উপকার
করছে নাকি ক্ষতি করছে ।
এছাড়াও জানতে পারবেন মোবাইল ফোনের উপকারিতা ও অপকারিতা,ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা,মোবাইল ফোনের ভালো দিক,মোবাইল ফোনের সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত ।
ভূমিকা
বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগে আরো একটি অন্যান্য আবিষ্কার হচ্ছে মোবাইল ফোন।
মোবাইল ফোন এমন একটি আশ্চর্যজনক আবিষ্কার যার মাধ্যমে মানব জীবনের অনেক সহজ করে
তুলেছে। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে একে অপরের সাথে যোগাযোগ করা থেকে শুরু করে, কেনা
কাটা, ছবি তোলা, ভিডিও করা, ভিডিও দেখা, ব্যাংকিং, ইন্টারনেট ব্যবহার এবং অনলাইনে
ক্লাস সব কিছুই করা যায়।
এই আর্টিকেল টিতে আমি আপনাকে জানাবো মোবাইল ফোনের উপকারিতা ও অপকারিতা,ছাত্র
জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা,মোবাইল ফোনের ভালো দিক,মোবাইল ফোনের সুবিধা ও
অসুবিধা ইত্যাদি সম্পর্কে। এই আর্টিকেল এর প্রথম আংশে আমি আপনাকে জানাবো মোবাইল
ফোনের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত।
মোবাইল ফোনের উপকারিতা ও অপকারিতা
বর্তমানে মোবাইল ফোন মানবজীবনে অতপ্রোতভাবে জড়িত। যেকোনো কাজে মোবাইল ফোন
ব্যবহৃত হয়। মোবাইল ফোন যেমন থাকা জরুরী তেমন এটি থাকা ও বিপদজনকও হতে
পারে।
মোবাইল ফোনের যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমন অপকারিতা রয়েছে। আর্টিকেলের এই অংশে আমি
আপনাকে মোবাইল ফোনের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানাবো। প্রথমেই মোবাইল ফোনের
উপকারিতা দেওয়া হলো-
১। অনলাইন শিক্ষা ও কাজঃ মোবাইল ফোন দিয়ে আপনি যেমন কাজ করতে পারেন তেমনি শিক্ষা
গ্রহণ করতে পারেন। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আপনি অনলাইন ক্লাস, বিভিন্ন কোর্স করতে
পারেন। আবার মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আপনি ফ্রিল্যান্সিং সহ, অফিস মিটিং ইত্যাদি কাজ
করতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ
নোবেল পুরুস্কার মানে কি ?
২। যোগাযোগঃ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আপনি খুব সহজে এবং দ্রুতই অন্যের সাথে যোগাযোগ
করতে পারবেন। মোবাইল ফোন দিয়ে আপনি যেকোন স্থানে,যেকোনো সময়, আপনার প্রিয়জন বা
সহকর্মী বন্ধু বা অফিসে খুব সহজেই এবং দ্রুত যোগাযোগ করতে পারেন। মোবাইল ফোনের
মাধ্যমে আপনি বিদেশেও যোগাযোগ করতে পারেন।
৩। বিনোদনঃ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আপনি আপনার মন খারাপের সময় বিনোদন নিতে পারেন।
যেমন মোবাইল ফোনে আপনি ইউটিউবে গান শোনা থেকে শুরু করে,ফেইসবুক,টিক
টক,ইনস্টাগ্রামে ভিডিও দেখে সময় পার করতে পারেন।
৪। ইন্টারনেট সুবিধাঃ ইন্টারনেট সুবিধার মাধ্যমে আপনি ভিডিও কল করতে পারবেন।
ইন্টারনেট দিয়ে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন তথ্য,পড়াশোনা করা, সোশ্যাল
মিডিয়ায় যুক্ত থাকার সুযোগ পেতে পারেন।
এতক্ষণ আমি আপনাকে জানালাম মোবাইল ফোনের উপকারিতা। যেকোনো কিছুর যেমন উপকারিতা
রয়েছে তেমনি তার কিছু অপকারিতাও রয়েছে। নিচে মোবাইল ফোনের অপকারিতা দেওয়া হলো-
১। শারীরিক কার্যকলাপ হ্রাস পায়ঃ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সব কিছুই করা যায়। যার
ফলে আপনি যখন সবকিছু আপনার হাতের মুঠোয় পেয়ে যাবেন তখন আপনার শারীরিক পরিশ্রম
হবে না। তখন আপনি স্বাভাবিকভাবে অলস হয়ে পড়তে পরেন। মোবাইল ফোনে শুধু
প্রাপ্তবয়স্ক নয়, শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষদের শারীরিকভাবে অলস
করতে পারে।
২। চোখের সমস্যাঃ মোবাইল ফোন এমন একটি যন্ত্র এটি মানব জীবনে নেশার মত কাজ করতে
পারে। আপনি যখন অতিরিক্ত মোবাইল ফোন দেখবেন তখন মোবাইল ফোনের আলো আপনার চোখে পড়ে
আপনার চোখের সমস্যা বৃদ্ধি করতে পারে। এর ফলে আপনার মাথা ব্যথা ঘুমের সমস্যা
ইত্যাদি শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৩। গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েঃ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আপনার
গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে। মোবাইল ফোনে বিভিন্ন অ্যাপের
মাধ্যমে বা লিংক এর মাধ্যমে আপনার বিভিন্ন গোপন ও ব্যক্তিগত জিনিস চুরি হয়ে
যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এতক্ষণ আমি আপনাকে জানালাম মোবাইল ফোনের অপকারিতা সম্পর্কে। এই আর্টিকেলে পরের
অংশে আমি আপনাকে যা জানাবো তা হলো ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা
সম্পর্কে।
ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা
ছাত্র জীবন সবার জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। বর্তমান সময়ে
ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে মোবাইল ফোন খুব সহজলভ্য হয়ে গিয়েছে। মোবাইল ফোনের বিভিন্ন
রকম ব্যবহারের ফলে মোবাইলের প্রতি আসক্তির ফলে অনেকের পড়াশোনা থেকে বিচ্যুতি
ঘটেছে। আর্টিকেলের এই অংশে আমি আপনাকে জানাবো ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা।
১। মাথাব্যথা ও চোখের ক্ষতিঃ অতিরিক্ত সময় ধরে আপনি যখন মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে
তাকিয়ে থাকবেন তখন মোবাইল ফোনের আলো আপনার মাথা ব্যথার কারণ হতে পারে এবং আপনার
চোখে দৃষ্টিশক্তি ও কমে যেতে পারে।
২। পড়াশোনায় অমনোযোগীঃ ছাত্র জীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো পড়াশোনা করা।
কিন্তু আপনি যখন অতিরিক্ত মোবাইল ফোনে আসক্ত হয়ে পড়বেন তখন আপনার পড়াশোনায়
ব্যাঘাত ঘটতে পারে। যার ফলে আপনার ভবিষ্যত বা আপনার স্বপ্ন ও ভেঙে যেতে পারে।
৩। ঘুমের সমস্যাঃ আপনি যখন সারারাত জেগে মোবাইল ফোন দেখবেন তখন আপনার ঘুমের
ব্যাঘাত ঘটতে পারে। আর রাতে ঘুম না হলে সারাদিন খারাপ করবে। আপনি ক্লাসে গিয়েও
ঝিমবেন যার ফলে ক্লাসে মনোযোগ কমে যেতে পারে।
আরো পড়ুনঃ
প্রেমিকার মন জয় করবেন কিভাবে ?
৪। সময় নষ্টঃ মোবাইল ফোন এমন একটি আসক্তি যন্ত্র যা আপনার পড়াশোনার অনেক সময় নষ্ট
করে দিতে পারে। আমি আপনাকে জানালাম ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা সম্পর্কে।
এর পরবর্তী অংশে আমি আপনাকে জানানোর চেষ্টা করবো মোবাইল ফোনের ভালো দিক সম্পর্কে
বিস্তারিত।
মোবাইল ফোনের ভালো দিক
আপনি যদি এই আর্টিকেলটিতে মোবাইল ফোনে ভালো দিক সম্পর্কে জানার জন্য এসে থাকেন
তাহলে আপনি একজন সঠিক জায়গায় ক্লিক করেছেন। চলুন এখন আমি আপনাকে জানবো মোবাইল
ফোনে ভালো দিক ।
১। যোগাযোগঃ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আপনি এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যোগাযোগ
করতে পারেন। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আপনি যেকোনো স্থান থেকে, যেকোনো সময় আপনি
বিদেশে বা দেশে আপনার আত্মীয় স্বজন দের সাথে খুব সহজেই যোগাযোগ করতে পারবেন।
২। বিনোদনঃ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আপনি অনেক বিনোদন নিতে পারেন। মোবাইল ফোনের
মাধ্যমে আপনি গান শুনতে পারবেন, সিনেমা দেখতে পারবেন, বিভিন্ন ফানি ভিডিও দেখতে
পারবেন। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আপনি অনেক রকম বিনোদন নিতে পারবেন।
৩। ইনকাম সোর্সঃ মোবাইল ফোন আপনার জন্য ইনকামের মাধ্যমও হতে পারে। মোবাইল ফোন
আপনি ফেইসবুকে ব্লগ বানিয়ে, বিভিন্ন রকম ভিডিও বানিয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে আপনি
ইনকাম করতে পারবেন যেমন ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি।
আরো পড়ুনঃ
আনসার জিডিপি কাজ কি ?
৪। অনলাইন শিক্ষাঃ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আপনি অনেক কিছু শিখতে পারবেন। ইউটিউব
দেখে আপনি বিভিন্ন রকম খাবার রেসিপি জানতে পারবেন। এর মাধ্যমে আপনি সেলাই, আপনার
কোনো সাবজেক্ট এর ক্লাস আপনি সব কিছুই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে শিখতে পারবেন।
এতক্ষন আমি আপনাকে জানালাম মোবাইল ফোনের ভালো দিক সম্পর্কে বিস্তারিত। এই
আর্টিকেল এর পরের অংশে আমি আপনাকে জানাবো মোবাইল ফোনের সুবিধা ও অসুবিধা।
মোবাইল ফোনের সুবিধা ও অসুবিধা
বর্তমান সময়ে মোবাইল ফোন মানব জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে। মোবাইল
ফোন যেমন সুবিধা দেয় তেমন অসুবিধা ও করে। আর্টিকেল এর এই অংশে মোবাইল ফোনের
সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে জানাবো। প্রথমে মোবাইল ফোনের সুবিধা দেওয়া হলো-
১। ভিডিও কলিংঃ আপনি যদি আপনার পরিবার পরিজন, প্রিয়জন থেকে দূরে থাকেন,অনেক দিন
দেখা না হয় তাহলে মোবাইল এর মাধ্যমে ভিডিও কলের মাধ্যমে আপনি খুব সহজে দেখে দেখে
কথা বলতে পারবেন।
২। লোকেশন সুবিধাঃ আপনি খুব জরুরি কোনো গন্তব্যে যেতে চান কিন্তু আপনি সেই জায়গা
চিনেন না। মোবাইল ফোনে থাকা জিপিএস আপনাকে ওই জায়গায় নিয়ে যায়তে সাহায্য করতে
পারবে।
৩। শপিংঃ আপনার যদি মনে হয় আপনি বাহিরে না গিয়েও ঘরে বসে শপিং করতে পারবেন মোবাইল
ফোনের মাধ্যমে। বিভিন্ন অনলাইন শপিং অ্যাপস রয়েছে এগুলো থেকে আপনি আপনার পছন্দ
মতো জিনিস অর্ডার করলে, আপনার ঘরে এসে দিয়ে যেতে পারে।
এতক্ষন আমি আপনাকে জানালাম মোবাইল এর সুবিধা। যেকোনো জিনিসের যেমন সুবিধা রয়েছে
তেমনি তার সামান্য কিছু অসুবিধা ও রয়েছে। নিচে মোবাইল ফোনের অসুবিধা দেওয়া হলো-
১। অশ্লীল কনটেন্ট দেখাঃ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই খারাপ কন্টেন্ট এ
প্রবেশ করতে পারেন। যার ফলে আপনি আপনার নৈতিকতা হারিয়ে ফেলতে পারেন।
২। আসক্তিঃ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আপনি অতিরিক্ত গেম খেলা এবং সোশ্যাল মিডিয়া
ভিডিও দেখায় আসক্ত হয়ে পড়তে পারেন। যার ফলে আপনার অনেক মূল্যবান সময় নষ্ট
হয়ে যেতে পারে আপনি সেটা বুঝতেও পারবেন না।
আরো পড়ুনঃ
সেভেন সিস্টার্স মানে কি ?
৩। পারিবারিক ও সামাজিক দূরত্বঃ মোবাইল ফোন এমন একটি জিনিস আপনি এর মধ্যে আসক্ত
হয়ে পড়লে আপনি আপনার পরিবারের সাথে সময় কাটানো ভুলে যাবেন। যার ফলে আপনার
পরিবার এবং সামাজের সাথে দুরুত্ব হয়ে তৈরি হতে পারে।এতক্ষণ আমি আপনাকে জানালাম
মোবাইল ফোনের সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে।
শেষ কথা
এই আর্টিকেল টিতে আমি আপনাকে যা যা জানালাম তা হলো মোবাইল ফোনের উপকারিতা ও
অপকারিতা,ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা,মোবাইল ফোনের ভালো দিক,মোবাইল ফোনের
সুবিধা ও অসুবিধা ইত্যাদি সম্পর্কে।
আশা করি এ আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন এবং এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি
আপনার মনের ভেতরে থাকা সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে থাকেন তাহলে আপনি আপনার বন্ধুদের
সাথে শেয়ার করুন এবং এইরকম তথ্যসম্বলিত ও গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পেতে আমাদের
ওয়েবসাইটটি প্রতিদিন ভিজিট করুন। ধন্যবাদ
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url