প্রাকৃতিক ভাবে ধূমপান ছাড়ার শক্তিশালী ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জেনে নিন

ধূমপান ছাড়া কঠিন হলেও প্রাকৃতিক উপায়ে এটি সম্ভব যদি আপনি তা চান । হাতের কাছে থাকা  ঘরোয়া উপাদান ও অভ্যাস বদলের মাধ্যমে আপনি ধূমপান থেকে চিরতরে মুক্তি পেতে পারেন। এই আর্টিকেল টি মনোযোগ সহকারে পড়লে আপনি সে সকল উপায় ও ঘরোয়া পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পারবেন । 
ধূমপান ছাড়ার উপায়

এছাড়াও জানতে পারবেন ধূমপান ছাড়ার উপায়,ধূমপান ছাড়ার পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া,ধূমপান ছাড়ার ঘরোয়া উপায় ও ধূমপান ছাড়ার নতুন ঔষধ এই সকল সম্পর্কে বিস্তারিত । 

ভুমিকা

ধূমপান একটি মরণব্যাধি সমস্যা আমাদের সমাজের দেশের রাষ্ট্রের ও সমস্ত পৃথিবীর। যে ব্যক্তি ধূমপান করে তার শরীরের উপর বিভিন্ন রকম প্রভাব ফেলে এই ধুমপান। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এর মতে প্রতিবছর সমস্ত পৃথিবীতে লক্ষ লক্ষ মানুষ ধূমপান করার জন্য মারা যাচ্ছে। 

আপনি যদি ধূমপান করে থাকেন এবং আপনি যদি ভাবেন যে আপনি ধূমপান ছেড়ে দেবেন তাহলে এই আর্টিকেল শুধুমাত্র আপনার জন্য কারণ আমি এই আর্টিকেলে আপনাকে জানাবো ধূমপান ছাড়ার উপায় এবং তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও ধূমপান ছাড়া নতুন ঔষধ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।

ধূমপান ছাড়ার উপায়

ধুমপান ছেড়ে দেওয়া একটি চ্যালেঞ্জিং এবং মারাত্মক কঠিন একটি কাজ হয়ে উঠে দাঁড়াবে কিন্তু এটি আপনি তখনই ছেড়ে দিতে পারবেন যখন আপনার ইচ্ছা শক্তি প্রবল হবে। তবে শুধুমাত্র ইচ্ছা শক্তি হলেও হবে না আপনার কার্যকার দক্ষতা এবং আপনার ধৈর্যের পরীক্ষা দিয়ে আপনাকে এই ধুমপান ছাড়তে হবে।

ধূমপান বলতে আমরা কি বুঝি এটা আমার জাতীয় কোন দ্রব্য সেটি হতে পারে গাঁজা সিগারেট ইত্যাদি জাতীয় জিনিস। চলুন আমি আপনাকে ধূমপান ছাড়ার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানায় -

১. পরিকল্পনা তৈরি করুনঃ সর্বপ্রথম আপনাকে পরিকল্পনা করতে হবে এবং আপনার ইচ্ছা সব থেকে বৃদ্ধি করতে হবে যা আপনি ধূমপান ছেড়ে দেবেন এবং তা কাজে বাস্তবায়ন করবেন। আপনি একদিনে হুট করে ধূমপান ছাড়তে পারবেন না 
আপনাকে ধাপে ধাপে ধুমপান ছাড়ার পরিকল্পনা করতে হবে। আপনি আপনার পরিকল্পনা গুলো আপনি মোবাইলের নোট করে রাখতে পারেন অথবা আপনি ডাইরিতে নোট করে রাখতে পারেন যে আপনি কোন দিনে?কিভাবে? কখন? পরিকল্পনা গুলো কাজে লাগাবেন।

২. কারণ খুজুনঃ সর্বপ্রথম আপনার মনকে বোঝাতে হবে এটা যে আপনি সিগারেট খাওয়ার একটি কোন খারাপ কারণ বুঝতে পেরেছেন যার ফলে আপনি সিগারেট ছেড়ে দিয়ে যাচ্ছেন বা ধূমপান ছেড়ে দিতে চাচ্ছেন। 

এটি হতে পারে আপনার স্বাস্থ্য এটি হতে পারে আপনার পারিবারিক আর্থিক সমস্যা এটি হতে পারে আপনার মুখে দুর্গন্ধ বা আপনার ঠোঁট কালো হয়ে যাওয়ার কারণ এর ফলে। এ ধরনের চিন্তাভাবনা করে আপনাকে আপনার মনকে বোঝাতে হবে যে এর পিছে নির্দিষ্ট একটি কারণ আছে এবং আপনার ইচ্ছা সব থেকে প্রবল রাখতে হবে।

৩.নতুন অভ্যাস তৈরি করুনঃ আপনি ধূমপানে রাতে অন্য কোন অভ্যাস যা আপনার ভালো লাগে তা তৈরি করতে পারেন যদি আপনি ধূমপান ত্যাগ করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে এর পরিবর্তে আরেকটি অভ্যাস যুক্ত করতে হবে।

সেটি হতে পারে যখন আপনি যে দিনে ধূমপান করতেন ওই সময়টাতে আপনি চা কফি অথবা পান বা অন্য কোন জাতীয় জিনিস ট্রাই করতে পারেন। 

এবং যখনই আপনার সিগারেট খাওয়ার বা ধূমপান করার জন্য ইচ্ছা জাগবে তখনই আপনি অন্য কোন কাজে মনোযোগ দিতে পারেন বা যদি মুসলিম হয়ে থাকেন তাহলে অজু করে দুই রাকাত নামাজ পড়ে নিতে পারেন সেই সময়ে। 

তবে ধূমপান ছাড়ার পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে সেগুলো সম্পর্কে আপনাকে একটু খেয়াল রাখতে হবে।

৪. পরিবার ও পরিবেশের সাহায্য নিনঃ সর্বপ্রথম আপনাকে আপনার পরিবারকে বুঝাতে হবে যে আপনি আর সিগারেট কন্টিনিউ করবেন না আপনি ধূমপান ছাড়তে যাচ্ছেন। 

এবং পরিবেশের বলতে আপনার বন্ধু-বান্ধব ইত্যাদি যারা আপনার সাথে ধুমপান করার সঙ্গে ছিল তাদেরকে অ্যাভয়েড করে চলতে হবে আপনাকে। 

আপনার যখন কোন সময় ইচ্ছা জাগবে সিগারেট বা ধূমপান করার তখন আপনি আপনার পরিবারের লোকজনের সাথে সময় কাটাবেন অথবা আপনার ভালো যে সকল বন্ধু আছে তাদের সাথে সময় কাটাবেন যেন আপনি সিগারেটের কথাটি ভুলে থাকতে পারেন। 

আপনি পরিবারের লোকজনের কাছ থেকে ধূমপান ছাড়ার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানতে চাইতে পারেন।

৫. ধৈর্য ধরুন এবং নিজেকে পুরস্কৃত করুনঃ এই কাজটি এত সহজ নয় যে আপনি চাইলে এবং আপনি সহজেই ধূমপান ছেড়ে দিলেন। আপনাকে এর জন্য অনেক ধৈর্য ধরতে হবে এবং মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে বা আপনার সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করতে হবে যাতে করে আপনি ধূমপান ত্যাগ করতে পারেন। 

এবং আপনি যদি তিন দিন বা সাত দিন এরকম একটা প্ল্যান করতে পারেন যে আপনি এই কয়দিন সিগারেট বা ধূমপান না করলে আপনি নিজেকে কোন না কোন ভাবে পুরস্কৃত করবেন। এ পুরস্কার আপনাকে আপনার সাফল্যে পৌঁছাতে সাহায্য করবে।

৬. ইতিবাচক দিক খুঁজুনঃ ধূমপান ছাড়ার পরে আপনার শরীরের যে ইতিবাচক দিকগুলো আসছে বা আপনার যে আশে পাশের পরিবেশ এর থেকে যা আপনি ইতিবাচক এই আকার ইঙ্গিলগুলো পাচ্ছেন এগুলো আপনি লক্ষ্য করুন । 

আপনি আপনার আর্থিক স্বচ্ছলতা ধরে রাখতে পারছেন এইগুলো ইতিবাচক দিক হিসেবে বিবেচনা করুন দেখবেন আপনি সহজেই ছেড়ে দিতে পারবেন। 

এতক্ষণ আমি আপনাকে ধূমপান ছাড়ার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানালাম।এখন আমি আপনাকে জানাবো ধূমপান ছাড়ার পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত-

ধূমপান ছাড়ার পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

ধূমপান ছাড়ার পর আপনার শরীরে অনেক ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তবে এই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো সাধারণত সাময়িক সময়ের জন্য। সময়ের সাথে সাথেই সমস্যাগুলো সমাধান হয়ে যায়। দোলন ধুমপা ছাড়ার পর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কি কি দেখা যায় তা সম্পর্কে আপনাকে জানাই।

ধূমপান ছাড়ার পর আপনার মাথা ব্যথা অথবা মাথা ঘুরে যেতে পারে তবে এটি মাঝে মাঝে ঘটবে।ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার সময় আস্তে আস্তে অনেকের ক্ষুধা বৃদ্ধি পেতে থাকে কারণ শরীরে নিকোটিনের অভাবের ফলে ক্ষুধা বৃদ্ধি পায়।
ক্ষুধা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ হয় এর জন্য হঠাৎ করে আপনার ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে ধূমপানের অভ্যাস ছাড়ার ফলে আপনার শরীরের কাঁপনি বা ঝিমঝিম একটি ভাব আসতে পারে অনেক সময় আপনার রাতে ঘুমের ব্যথা করতে পারে এবং আপনার কাশি গলা ব্যথায ইত্যাদি দেখা দিতে পারে ।
ধূমপান ছাড়ার পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

আবার অনেক ক্ষেত্রে মানসিক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে যেমন আপনার মেজাজ খিটখিটে হয়ে থাকবে আপনি সবসময় বিষন্নতা অনুভব করবেন এবং আপনার মস্তিষ্ক সবসময় চাবে যে আপনি আবার ধূমপান করুন।

একটু পরে আমি আপনাকে ধূমপান ছাড়ার নতুন ঔষধ সম্পর্কে জানাবো তার আগে চলুন আমি আপনাকে জানাই ধূমপানার ঘরোয়া উপায়।

ধূমপান ছাড়ার ঘরোয়া উপায়

ধূমপান এমন একটা জিনিস এটাতে সহজে প্রবেশ করা যায় কিন্তু সহজে বের হওয়া যায় না।চলুন আমি আপনাকে কয়েকটি সম্পর্কে জানাই যেগুলো মেনে চললে আপনি ধূমপান ছাড়া থাকতে পারবেন -

গভীর শ্বাস ও ধ্যানঃ আপনার ধূমপানের ইচ্ছা জাগে তখন আপনি গভীর শ্বাস নিন। কোন কাজে লেগে পড়ুন অথবা ব্যাম করতে লাগুন।

তুলসী পাতাঃ প্রতিদিন দুটি থেকে তিনটি তুলসী পাতা চিবিয়ে খান এটি আপনার নিকোটিনের চাহিদা পূরণ করবে এবং নিকোটিনের আসক্তি থেকে আপনাকে বাঁচাবে।

মধু ও দারুচিনিঃ আপনি মধু ও দারুচিনি খেয়ে নিকোটিন থেকে বাঁচতে পারেন। প্রতিদিন এক গ্লাস পানিতে মধু দিয়ে তাতে হালকা দারুচিনি গুঁড়ো দিয়ে প্রতিদিন নিয়ম করে পান করুন আশা করি আপনি ধূমপান ছাড়তে পারবেন।
জল খাবার বা চুইং করার কিছুঃ আপনি সাধারণত চুইংগাম খাইতে পারেন অথবা শসা গাজর ইত্যাদি চিবিয়ে খেতে পারেন যা আপনার মুখে সবসময় চ্ইং করে রাখবে।

আঙুরের রসঃ ধূমপান ছাড়ার পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হওয়ার কারণে আপনি আঙ্গুরের রস খেতে পারেন। এটি আপনাকে ধূমপান থেকে বাঁচিয়ে রাখবে।

এতক্ষণ আমি আপনাকে ধূমপান ছাড়ার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানাচ্ছিলাম এখন আমি আপনাকে জানাবো ধূমপান ছাড়া নতুন ঔষধ সম্পর্কে।

ধূমপান ছাড়ার নতুন ঔষধ

যদি আপনি ধুমপান করতে করতে এক্সট্রিম লেভেলে চলে যান তবে সেক্ষেত্রে উপরের কোন নিয়ম কানুন আপনার জন্য কার্যকর হবে না তখন আপনাকে থেরাপি না হয় ওষুধ ব্যবহার করতে হবে ধূমপান ছাড়ার জন্যে। চলুন আমি আপনাকে ধূমপান ছাড়ার কয়েকটি কথা সম্পর্কে জানাই।
ধূমপান ছাড়ার নতুন ঔষধ

ওষুধ কয়েক প্রকার হতে পারে তার মধ্যে আমি আপনাকে প্রথমে জানাবো হোমিও ওষুধ সম্পর্কে, ধূমপান ছাড়া কয়েকটি হোমিও ওষুধ হল Ignatia,Plantago Major,Lobelia Inflata,Caladium Seguinum,Tabacum ইত্যাদি। এই ওষুধগুলো ধূমপান ছাড়তে সাহায্য করে থাকে। 

এখন আমি আপনাকে ধূমপান ছাড়ার অ্যান্টিবায়োটিক সম্পর্কে জানাবো। ধূমপান ছাড়ার প্রথম ওষুধ হল ‘ভারেনিক্লিন’’ এটি মস্তিষ্কের কে ধূমপানের প্রভাব বলতে সাহায্য করে। 
এছাড়াও রয়েছে ‘বুপ্রোপিয়ন’’ যা মস্তিষ্কে ধূমপানের প্রভাব কমায় এবং নিকোটিন হতে দূরে থাকতে সাহায্য করে। আর আপনি যদি এক্সট্রিম লে ফেলে চলে যান তাহলে “নিকোটিন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি” নামক এ থেরাপী টি আপনাকে দেওয়া হবে।

শেষ কথা

এই আর্টিকেলটিতে আমি আপনাকে জানালাম ধূমপান ছাড়ার উপায় ও ধূমপান ছাড়ার পর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াসহ ধূমপান ছাড়া নতুন ঔষধ সম্পর্কে। আশা করি আর্টিকেলটি পরে আপনি ধূমপান ছাড়ার সকল কলা কৌশল এবং সকল ঔষধ সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

আপনি যদি আপনার মনে থাকা সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে থাকেন তাহলে এমন কার্যকরি আর্টিকেল পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিসিট করুন এবং বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন । ধন্যবাদ ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url