মাত্র কয়েকদিনেই চুল সোজা করার উপায় সম্পর্কে জেনে নিন

আপনার চুল যদি কোকড়ানো হয় তাহলে মাত্র কয়েকদিনেই চুল সোজা করার উপায় সম্পর্কে জেনে নিন 

এছাড়াও  চুল সোজা করার উপায়,৭ দিনে চুল লম্বা করার উপায়,চিরতরে চুল পড়া বন্ধ করার উপায় 

ও চুল পড়া বন্ধ করার ভিটামিন এই সকল তথ্য সম্পর্কে জানুন । 

চুল মানুষের সৌন্দর্যের প্রধান ও অন্যতম একটি উপাদান। আমরা অনেকেই চুল নিয়ে চিন্তিত থাকি। অনেকের চুল ছোট অনেকের চুল বাঁকা। প্রাকৃতিকভাবে সবার চুল একরকম হয় না তবে কিছু চেষ্টা ও নিয়ম মেনে চললে আপনার চুল ঘন কালো সোজা এবং লম্বা হতে পারে।

ঘন কালো চুল সোজা চুল এবং লম্বা চলছে তো মাত্র সৌন্দর্য বর্ধন করে না বরং এটি আপনার কনফিডেন্স বৃদ্ধি করে। এ আর্টিকেলটিতে আমি আপনাদেরকে জানাবো চুল সোজা করার উপায়,চিরতরে চুল পড়া বন্ধ করার উপায়সহ ৭ দিনে চুল লম্বা করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।

আপনি যদি চুল সোজা করার উপায় জানতে এই আর্টিকেলটিতে ক্লিক করে থাকেন তাহলে আপনি কোন ভুল করেননি, আপনি বরং সঠিক জায়গায় এসেছেন। চোল সোজা করা দুটি উপায় রয়েছে প্রাকৃতিক এবং কৃত্রিম উপায়। 

তবে কৃত্রিম উপায়ে চুল সোজা করা চেয়ে প্রাকৃতিক উপায়ে সোজা করার চেষ্টা করা ভালো কারণ এতে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হয় না কিন্তু কৃত্রিমভাবে চল সোজা করতে গেলে এতে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে চলুন প্রাকৃতিকভাবে চুল সোজা করার উপায় সম্পর্কে আমি এখন আপনাকে জানাই।

নারকেল দুধ ও লেবুর রসঃ

এক কাপ নারকেল দুধ নিন এবং তার সাথে দুই চা চামচ লেবুর রস নিন। দুধ ও লেবুর রস একসাথে ভালোভাবে মিশ্রণ করুন অতঃপর এটি ফ্রিজে আধা ঘন্টা রেখে দিন।

 আধা ঘন্টা পর ফ্রিজ থেকে বের করুন আপনার চুল যেখানে সোজা করতে চান সেই অংশে ভালোভাবে লাগিয়ে রাখুন চুলে লাগিয়েও আধা ঘন্টা থেকে এক ঘন্টা অপেক্ষা করুন অতঃপর গরম পানি ও শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে চুল ধুয়ে ফেলুন আশা করি আপনার চুল সোজা হয়ে যাবে এভাবে সপ্তাহ ব্যবহার করতে পারলে ইনশাআল্লাহ।

ডিম ও অলিভ অয়েল মিশ্রণঃ

একটি ডিম নিন ও সাথে দুই চা চামচ অলিভ অয়েল তেল নিন। ডিমের শুধুমাত্র কুসুম বাদ দিয়ে সাদা অংশটুকু এবং অলিভ অয়েল মিশ্রণ করুন তারপরে সেটি আপনার মাথায় লাগিয়ে রাখুন আপনার ইচ্ছামতো সেটি ৪৫ মিনিট থেকে এক ঘন্টাও হতে পারে। তারপর চুলকে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এভাবে সপ্তাহে তিনবার ব্যবহার করলে আপনার চুল সোজা এবং নরম হতে সাহায্য করবে।

দুধ ও মধুর মিশ্রণঃ

একটি বাড়িতে আধা কাপ দুধ এবং দুই চা চামচ মধু নিন। তারপরে সুন্দর করে মিশ্রণ করুন এবং চুলে লাগিয়ে ২ ঘন্টা অপেক্ষা করুন তারপর হালকা গরম পানি ও শ্যাম্পু দিয়ে জল ধুয়ে ফেলুন এভাবে সপ্তাহে এক বার করে করুন আশা করে চার সপ্তাহ করলে আপনার চুল সোজা ও নরম হয়ে যাবে ।

এছাড়াও এলোভেরা জেল মাথায় ব্যবহার করার ফলেও চুল সোজা করা সম্ভব অথবা সরাসরি অ্যালোভেরা অনেকক্ষণ চলে দিয়ে রাখলে চুল নরম ও সোজা হয়। এইগুলা প্রাকৃতিক উপায় গেল এছাড়াও কিছু কৃত্রিম উপায় রয়েছে। 

কৃত্রিম উপায়ে স্টেইনার ব্যবহার, স্টেইটেনিং ট্রিটমেন্ট ইত্যাদির মাধ্যমেও চুল সোজা করা যায়।এছাড়াও আপনি যদি নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করেন এবং নিয়মিত মিনারেল পানি খেতে থাকেন তাহলে আপনার চুল অনেক মজবুত ও শক্তিশালী হয়ে থাকবে। একটু পরে আমি আপনাকে জানাবো ৭ দিনে চুল লম্বা করার উপায়।

আমাদের সকলের ইচ্ছা থাকে যা আমাদের চুলগুলো সুন্দর এবং লম্বা হবে। চলুন এখন আমি জানা আপনাকে জানাবো ৭ দিনে চুল লম্বা করার উপায়। চুল লম্বা করতে -

১. নিয়মিত তেল মালিশ করুনঃ

নারিকেল তেল, কাস্টর অয়েল অলিভ অয়েল ব্যবহার করুন। নারিকেল তেল চুলের গোড়ায় পুষ্টি যোগায় ও চুলকে শক্তিশালী করে। অলিভ অয়েল চুলের মসৃণতা ও ঘনত্ব বৃদ্ধি করে। ক্যাস্টর অয়েলের ভিটামিন ই থাকে যার ফলে এটি চুলকে দ্রুত লম্বা করতে সাহায্য করে।

২. রাতে চুল বেঁধে রাখুনঃ

রাতে চুল হালকা করে বেঁধে ফেনী করে রাখুন এতে করে আপনার চুল কম ভেঙে যাবে এবং চুল ঠিক থাকবে।

৩. গ্রিন টি ব্যবহার করুনঃ

গ্রিন টিতে আন্টি অক্সিডেন্ট থাকে যা চুলের উপকারিতার জন্য কাজ করে থাকে। গ্রিনটি ঠান্ডা করুন এক ঘন্টা পর সেটা তুলে লাগান তারপর সম্পক দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। কারণ এটি চুলকে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

৪. স্ক্যাল্প ম্যাসাজঃ

প্রতিদিন চুলের গোড়ায় ৪ থেকে ৫ মিনিট মাসাজ করুন কারণ এতে চুলের গোড়ায় রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে যার ফলে চুলকে সুস্থ স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে এবং চুলকে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

এছাড়াও সঠিক খাদ্য ও পানি গ্রহণের ফলে চুল লম্বা হতে সাহায্য করে। 

উপরের এই নিয়মগুলো ছাড়াও আপনি ডিমের মাক্স ইউজ করতে পারেন মেথি ইউজ করতে পারেন। এতক্ষণ আমি আপনাকে জানাচ্ছিলাম ৭ দিনে চুল লম্বা করার উপায়। একটু পরে আমি আপনাকে জানাবো চিরতরে চুল পড়া বন্ধ করার উপায়।

বয়সের তারতম্যের কারণে আমাদের চুল ধরা শুরু করে দেয়। আমরা সকলেই চাই যে আমাদের মাথার চুল ঠিক থাকুক। এরপরেও বয়সের কারণে অনেকের চুল ঝরে যায় তারপরেও কিছু নিয়ম মেনে চললে এ চুল পড়া নিয়ন্ত্রণ হয় অথবা কারো কারো চিরতরে চুল পড়া বন্ধ হয়। চলুন এয়ার টিকেটটিতে আমি আপনাকে চিরতরে চুল পড়া বন্ধ করার উপায় সম্পর্কে জানায়-

১. পেয়াজের রস

পেঁয়াজের রস চুলের গোড়াকে শক্ত করে এবং নতুন চুল কাটাতে সাহায্য করে। আপনি যদি সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার পেঁয়াজের রস মাথার চুলের গোড়ায় লাগাতে পারেন তাহলে আপনি চুল পড়া থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

২.মেথি বীজের পেস্ট

মেথি বীজ পানিতে সারারাত ভিজিয়ে রাখুন। সকালে মেথি বীজ বেশ ভালো করে বেটে পেস্ট করে নেন । এরপর মাথার চুলের গোড়ায় ভালো করে লাগিয়ে রাখুন এক ঘন্টা পর ধুয়ে ফেলুন এবং শ্যাম্পু করুন।

৩.অ্যালোভেরা

তাজা এলোভেরা ভেঙে অ্যালোভেরার রস মাথায় ম্যাসাজ করতে থাকুন সপ্তাহে এভাবে দুই থেকে তিন দিন অ্যালোভেরা ভেঙে চুলের গোড়ায় মাসাজ করতে থাকুন। অ্যালোভেরা চুলের গোড়াকে শক্তিশালী করে এবং চুল পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করে। চুলের আদ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।

৪.মানসিক চাপ কমান

চুল পড়ে যাওয়ার অন্যতম একটি কারণ হলো মানসিক চাপ। যার মানসিক চাপ যত বেশি তার চুলে পড়ে যাওয়ার প্রবণতা তত বেশি। এর জন্য মানসিকভাবে সুস্থ রাখতে হবে যাতে করে আপনার চুল সুস্থ থাকে। মানসিকভাবে সুস্থতা শুধু চুলকেই নয় আমাদের শরীর ও দেহ এই সকল কেই সুন্দর রাখে।

৫.চিকিৎসকের পরামর্শ নিন

যদি আপনার চুল পড়ে যাওয়ার পরিমাণ অত্যাধিক বেশি হয় বা আপনি কোনভাবেই কোন কিছুতেই চুল পড়া কাটাতে পারছেন না তাহলে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ ডার্মালজিস্ট চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

এছাড়াও সঠিক খাদ্য ও সঠিক পানি এবং নিয়মিত চুলে তেল মালিশ করলে চুল পড়া বন্ধ থেকে বাঁচতে পারবেন। চলুন এবার আমি আপনাকে চুল পড়া বন্ধ করার ভিটামিন সম্পর্কে বিস্তারিত জানাই

অনেক ভিটামিন আছে যেগুলো আমাদের চুল পড়া রোধ করতে সাহায্য করে। আর্টিকেলের এই অংশে চলুন আমি চুল পড়া বন্ধ করার ভিটামিন সম্পর্কে এবং এই ভিটামিন কোন খাবারে পাওয়া যায় সে সম্পর্কে আপনাকে জানাবো -

বায়োটিন অথবা ভিটামিন বি ৭ চুল পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করে। এই ভিটামিনের উৎস ডিম আখরোট, কাঁচা বাদাম, মুরগির মাংস, ডাল ও কলা।ভিটামিন এ চুল পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করে। ভিটামিন এ এর উৎস হল দুধ, গাজর, পালং শাক, মাছের তেল।

ভিটামিন সি চুল পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করে এর উৎস হল কমলা,লেবু, পিয়ারা, টমেটো ইত্যাদি।

ভিটামিন ডি ও চুল পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করে ভিটামিন ডি এর উৎস হলো টোনা মাছ, ডিমের কুসুম ও সূর্যের আলো।

ভিটামিন ই রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং চুলকে বড় করতে সাহায্য করে। ভিটামিন ই এর উৎস হল সূর্যমুখীর বীজ, বাদাম, পালং শাক ও এভোকেডো। জিংক চুলের কোষ পুনর্গঠনে সাহায্য করে এবং চুল পড়া রোধ করে। জিংক এর উৎস হলো সামুদ্রিক খাবার অর্থাৎ ঝিনুক চিংড়ি, শিম, দই ও বাদাম ইত্যাদি।

এই আর্টিকেল টি তে আমি আপনাদের জানানোর চেষ্টা করেছি চিরতরে চুল পড়া বন্ধ করার উপায়, চুল সোজা করার উপায় ও চুল পড়া বন্ধ করার ভিটামিন সম্পর্কে আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন। ধন্যবাদ এতক্ষণ মনোযোগ দিয়ে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার জন্য।