কোন শাকে কি উপকারিতা থাকে জেনে নিন ।
বাংলাদেশের খাবারের তালিকায় শাক সবজি একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। নানা প্রকার শাক আমাদের চারপাশে সহজলভ্য হলেও আমরা অনেকেই জানি না এই শাক গুলোর মধ্যেই লুকিয়ে আছে অসাধারণ পুষ্টিগুণ । শাক অনেক পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ খাবার চলুন জেনে নিন কোন শাকে কি উপকারিতা থাকে।
এছাড়াও পালং শাকের উপকারিতা,কচু শাকের উপকারিতা,লাউ শাকের উপকারিতা ,পাট শাকের
উপকারিতা ও কলমি শাকের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন ।
ভুমিকা
শাক বাঙালিদের একটি জনপ্রিয় খাবার। বিশেষ করে গ্রামের মানুষের অন্তত সপ্তাহে
একদিন এই খাবারটি তাদের খাদ্য অভ্যাসে থাকে। সাথে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের গুনাগুন।
এজন্যই চলুন এই আর্টিকেলটিতে আমি আপনাকে জানাই পালং শাকের উপকারিতা,কচু শাকের
উপকারিতা,লাউ শাকের উপকারিতা,পাট শাকের উপকারিতা ও কলমি শাকের উপকারিতা সম্পর্কে
বিস্তারিত তথ্য।
পালং শাকের উপকারিতা
আপনি যদি পালং শাকের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে এই আর্টিকেলটিতে এসে থাকেন তাহলে
আপনি সঠিক জায়গায় ক্লিক করেছেন। চলুন আর্টিকেলের প্রথম অংশে আমি আপনাকে পালং
শাকের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানায়।
আরো পড়ুনঃ সেভেন সিস্টার্স মানে কি ?
পালং শাক পুষ্টিগণের সমৃদ্ধ একটি শাক এই শাকে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি,
ভিটামিন কে, ফোলেট, আয়রন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ যা
আমাদের শরীরের বিভিন্ন কার্যক্রমের সাহায্য করে থাকে।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করেঃ পালং শাকে উচ্চ পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকে
যা আমাদের রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে এবং হৃদরোগের ঝুকি কমাতে সাহায্য করে থাকে
এর জন্য আমাদের সকলের পালক শাকের সময়ে পালংশাক খাওয়া উচিত।
ত্বক ও চুলের জন্য উপকারীঃ উপরে আমরা জানলাম যে পালং শাকে থাকে তাধিক পরিমাণে
ভিটামিন সি এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের ত্বক এর রুক্ষতা ও সুষ্কতা কমিয়ে
ত্বককে মসৃণ ও সজীব রাখে। এছাড়া এটি আমাদের চুলকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করেঃ পালং শাকের উচ্চ পরিমাণে আশ থাকে যা আমাদের হজম
শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এবং আপনার যদি কোষ্ঠকাঠিন্য থাকে তাহলে আপনার
কোষ্ঠকাঠিন্য ভালো করতে পালং শাক সাহায্য করে থাকবে।এছাড়া পালং শাকে রয়েছে
আয়রন যারা রক্তস্বল্পতা বা অ্যানিমিয়া মতে সাহায্য করে থাকে।
পালং শাকে কম ক্যালরি থাকে এবং উচ্চ আঁশ থাকে যার ফলে এটি সহজে ক্ষুধা
লাগতে দেয় না যার ফলে পেট অনেকক্ষণ ভরে থাকে এবং আমাদের অনেকক্ষণ খাওয়া লাগে না
যার ফলে ওজন কমাতে আমাদের সাহায্য করে থাকে।
এছাড়া পালংশাক নিয়মিত খেলে এটি আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী এর জন্য আপনাকে
অন্তত সপ্তাহে একদিন পালং শাক আপনার খাদ্য অভ্যাসের সাথে রাখা উচিত। এতক্ষণ আমি
আপনাকে পালং শাকের উপকারিতা সম্পর্কে জানাচ্ছিলাম চলুন আর্টিকেলের পরের অংশে আমি
আপনাকে কচু শাকের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানাই।
কচু শাকের উপকারিতা
কচু শাক বাংলাদেশের একটি ব্যাপক পরিচিত একটি শাক। এটি যেখানে সেখানে দেখতে পাওয়া
যায় বিশেষ করে বাংলাদেশের গ্রাম গঞ্জের ওর বাওর বিল অথবা গ্রামের পুকুরের
আশেপাশে এই কচু গাছ হয়ে থাকে তবে বর্তমানে এখন কচু শাক বাণিজ্যিক ভাবে কাজ করা
হচ্ছে।
এতে যেমন কৃষকদের অর্থের অভাব পূরণ হচ্ছে সাথে সাথে আমাদের শারীরিক চাহিদা ও পূরণ
হচ্ছে এই শাককে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি শাক। এই শাক টিও পুষ্টি গুণে সমৃদ্ধ
একটি শাক। এই শাকে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ফোলেট, আয়রন,
ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন
কার্যক্রমের সাহায্য করে থাকে। চলুন এখন আমি আপনাকে কচু শাকের উপকারিতা সম্পর্কে
জানায়।
আরো পড়ুনঃ আনসার জিডিপি কাজ কি ?
হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করেঃ কচুশাকে অনেক ফাইবার থাকে যা আমাদের হজমের
উন্নতি ঘটায় এবং আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে থাকবে।চোখের জন্য
অত্যন্ত উপকারীঃ কত শাকের মধ্যে ভিটামিন এ থাকে যা চোখের জন্য অত্যন্ত উপকারী
একটি সবজি হিসাবে পরিচিত যা খেলে রাত কানা অথবা অন্ধত্ব থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
হাড়ের জন্য উপকারীঃ কচুশাকে রয়েছে অত্যাধিক পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন কে
যা আমাদের স্বাস্থ্য কে উন্নত করতে এবং আমাদের হাড়ের সাথে দাঁতের ও শক্তির
বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এবং হাড় ও দাঁতকে মজবুত রাখে।
এছাড়াও ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্যের জন্য কচু শাক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারন কত
সালে হয়েছে ভিটামিন সি এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান চুলের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে
সাহায্য করে। অন্যান্য শাকের মতো এর সাথেও কম ক্যালরি থাকে যা শরীরের ওজন কমাতে
এবং অতিরিক্ত মেদ কমাতে সাহায্য করে থাকে এদের সাধারণত সুষম খাদ্যের বিশেষ অংশ
হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
কত শাকের পটাশিয়াম থাকে যার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের সাহায্য করে এবং হৃদরোগের
ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে থাকে। এখন আমি আপনাকে কচু শাকের উপকারিতা সম্পর্কে
বিস্তারিত জানাচ্ছিলাম চলনা আর্টিকেলের পরের অংশে আমি আপনাকে জানাবো লাউ শাকের
উপকারিতা।
লাউ শাকের উপকারিতা
আপনি যদি লাউ শাকের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে এই আর্টিকেলটিতে ক্লিক করে থাকেন
তাহলে আপনি কোন ভুল করেননি আপনি এই আর্টিকেল টি তে ক্লিক করে সঠিক জায়গায়
এসেছেন। চলুন এখন আমি আপনাকে লাউ শাকের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানাই।
লাউ শাক বাংলাদেশ একটি সহজলভ্য শাক। গ্রামে সাধারণত মানুষ মাচায় অথবা বাসার চালে
এই লাউ শাক পাতাটি পেয়ে থাকে। তবে এখন এটি বাণিজ্যিকভাবেও শুরু হয়েছে চাষ করা
চলুন আমি আপনাকে এখন লাউ শাকের কয়েকটি উপকারিতা সম্পর্কে জানাই। লাউ শাক একটা
ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার। এতে রয়েছে ভিটামিন এ ভিটামিন সি ভিটামিন কে আয়রন
ক্যালসিয়াম ম্যাগনেসিয়াম এবং ফলেট। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পেশির শক্তি বৃদ্ধি করেঃ লাউ শাকের খনিজ উপাদান থাকে অনেক বেশি পরিমাণে যার কারণে
এটি আমাদের বেশি শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এবং আপনার শরীরে যদি ক্লান্ত থাকে
তাহলে আপনার শরীরের ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করবে এই লাউ শাক।
আরো পড়ুনঃ
শরীরে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করেঃ লাউ শাক শীতলতা মূলক এবং দেহের তাপমাত্রা
নিয়ন্ত্রণের সহায়তা করে থাকে। বিশেষ করে গরমের দিনেই লাউ শাক শরীরকে ঠান্ডা করে
রাখতে সাহায্য করে। বাংলাদেশ অত্যাধিক গরম এলাকায় অথবা ইটের ভাটায় যে সকল
শ্রমিকরা কাজ করে থাকে তারা এ লাউ শাক গ্রহণ করে থাকে খাবার হিসেবে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করেঃ লাউ শাকে কম ক্যালরি থাকে এবং এটি অত্যন্ত ফাইবার
যুক্ত একটি খাবার যা দীর্ঘ সময় পেটে ভরা অনুভূতি দেয় যার ফলে এটি অনেক সময়
আমাদের ক্ষুধা লাগে না এর জন্য আমাদের খেতেও হয় নাই এবং আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে
রাখতে সাহায্য করে থাকে।
লাউ শাক শরীরের ব্যথা কমায়ঃ লাউ শাকে একটি এন্টি ইন ফ্লামেটরি গুণ রয়েছে যা
আমাদের শরীরের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। আপনার যদি বিভিন্ন ধরনের স্নায়বিক
সমস্যা থাকে তাহলে সে সুনাভাবিক সমস্যাগুলো প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে লাউ
শাক।
যদি এই খাবারটি সহজেই পাওয়া যায় এর জন্য আপনার অন্তত সপ্তাহে একবার আপনার
খাদ্যাভ্যাসের সাথে এই খাবারটি রাখা উচিত। এতক্ষণ আমি আপনাকে জানানোর চেষ্টা
করেছি লাউ শাকের উপকারিতা চলনা আর্টিকেলের পরের অংশে আমি আপনাকে জানানোর চেষ্টা
করব পাট শাকের উপকারিতা।
পাট শাকের উপকারিতা
চলুন আর্টিকেলের এই অংশে আমি আপনাকে পাট শাকের উপকারিতা সম্পর্কে জানায়। আজ
সাক্ষী সাধারণত পাঠকের জন্য বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা না হয়ে থাকলেও এটি পার্টির
জন্য চাষ করা হয় তবে আপনি পাটের শাক খেতে পারেন কারণ পাট শাকে রয়েছে প্রচুর
পরিমাণে ভিটামিন ভিটামিন এ সি কে ক্যালসিয়াম আয়রন ম্যাগনেসিয়াম ফসফরাস ফুলের
পটাশিয়াম এবং আরো অনেক ধরনের পুষ্টি গুন যা আমাদের শরীরে নানা ধরনের পুষ্টির
চাহিদা পূরণ করতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুনঃ উটের মাংসের উপকারিতা
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন সাহায্য করেঃ পাট শাক রক্তে শর্করা ও গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ
করতে সাহায্য করে যারা ডায়াবেটিস রোগের জন্য অনেক উপকারী জন্য ডায়াবেটিস
রোগীদের জন্য পাট শাক খুবই ভালো। এছাড়াও এটি শরীরের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে
হাড়ের শক্তি বৃদ্ধি করে ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য রক্ষা করতে সাহায্য করে রক্ত
স্বল্পতা কমায় এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।
এতক্ষণ আমি আপনাকে পাট শাকের উপকারিতা সম্পর্কে জানাচ্ছিলাম চলুন এখন আমি
আপনাকে কলমি শাকের উপকারিতা সম্পর্কে জানাই।
কলমি শাকের উপকারিতা
আপনি যদি কলমি শাকের উপকারিতা সম্পর্কে জানতেই আর্টিকেলটিতে এসে থাকেন তাহলে আপনি
সঠিক জায়গায় ক্লিক করেছেন। কলমি শাকের কয়েকটি উপকারিতা রয়েছে। তার মধ্যে
উল্লেখযোগ্য কয়েকটি উপকারিতা হলো দেহতো কলমি শাকে রয়েছে ভিটামিন এ ভিটামিন সি
ভিটামিন এ ভিটামিন কে আয়রন ইত্যাদি।
এই সকল ভিটামিন থাকার কারণে কলমি শাক রক্তস্বল্পতা দূর করে ব্যাথা কমাতে সাহায্য
করে হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে কলমি শাক প্রাকৃতিক ডিএক্সট্রিফায়ার
হিসেবে কাজ করে যা যজ্ঞ এবং কিডনির জন্য অনেক উপকারী হয়ে থাকে। কলমি শাকে অনেক
পরিমাণে আয়রন থাকে যা রক্ত তৈরীর প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে এবং রক্তস্বল্পতা
প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
অবশ্যই উপরের সকল শাক আপনার সপ্তাহের অন্তত একটি দিন খাদ্যাভ্যাসে থাকা উচিত।
শেষ কথা
এই আর্টিকেল টি তে আমি আপনাদের জানানোর চেষ্টা করেছি, পালং শাকের উপকারিতা,কচু শাকের উপকারিতা,লাউ শাকের উপকারিতা,পাট শাকের উপকারিতা ও কলমি শাকের উপকারিতা।
আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন। ধন্যবাদ এতক্ষণ মনোযোগ দিয়ে
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার জন্য।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url